রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে ‘গুম’-এর যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা এখনই থামাতে বলেছে জাতিসংঘ। এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারকে গুরুতর ওই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলেছে গুম বিষয়ক জাতিসংঘ কমিটি। গত সপ্তাহে কমিটির সুপারিশসহ তাগিদপত্র ঢাকায় পৌঁছেছে। ঢাকা ও জেনেভার দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুম-বিষয়ক ওয়ার্কিং কমিটির অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমনে বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার রীতিমতো ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এখানে ‘গুম’কে অনেকটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সরকার। গুমের অভিযোগের বিষয়ে জাতিসংঘ ওয়ার্কিং কমিটির কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ রয়েছে জানিয়ে বলা হয়- এ নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসতে দফায় দফায় চেষ্টা করেছে, কিন্তু ঢাকার তরফে সহযোগিতা দূরে থাক, সাড়া-ই মিলেনি।
বিষয়টি নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের গুম-বিষয়ক ওয়ার্কিং কমিটির ১২৫তম বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনার ভিত্তিতে হালনাগাদ হওয়া একটি রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল এক প্রতিনিধি জাতিসংঘের ওই রিপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি ওই রিপোর্ট নিয়ে বরাবরের মতো প্রশ্ন তুলেছেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, মানবাধিকার পরিষদের আলোচনায়ই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গুমের অভিযোগ খণ্ডন করেছেন। সেখানে মন্ত্রী খোলাসা করেই বলেন, বাংলাদেশে ঘন ঘন গুমের যে অভিযোগ করা হয় তার সঙ্গে সরকার একমত নয়। নানা কারণে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ‘গুম’ হিসেবে চালিয়ে দেয়ার একটি প্রবণতা বাংলাদেশে লক্ষণীয়। মন্ত্রী পাল্টা অভিযোগ করেন এমন দাবি সরকারের অর্জন ও ভাব-মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করার হীনউদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে।