আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের কার্যক্রম শুরুর পর ১৩ কর্মদিবসে ৪০০ অভিযোগ জমা পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে গিয়ে গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে কমিশন। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলটি (জেআইসি) ডিজিএফআইয়ের সদর দফতরের ভেতরেই। দোতলা ওই ভবনে ২২টি সেল আছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি অনুসন্ধান কমিশনের সভাপতি।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক যারা গুম হয়েছেন তাদের অভিযোগগুলো নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদেরও আমরা ডাকব।
কমিশনের সভাপতি বলেন, সবচেয়ে বেশি গুমের অভিযোগ এসেছে র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি ও সিটিটিসির বিরুদ্ধে। ২৫ সেপ্টেম্বর আমরা ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। ১ অক্টোবর আমরা ডিবি ও সিটিটিসি পরিদর্শন করেছি। তবে সেখানে কোনো বন্দি আমরা পাইনি।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সরকারের সমালোচক ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমনের কাজে সরকারের পক্ষে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের মত ঘটনা ঘটিয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। যার পরিমাণ এতই যে সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা কোনো সংস্থার কাছে নেই।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের তলব করা হবে যদি তারা সাড়া না দেন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানায় সংস্থাটি।
গত সাড়ে ১৫ বছরে গুমের ঘটনার তদন্ত ও বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গত ২৭ আগস্ট ‘গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে এই কমিশন গঠন করে সরকার।
১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে অভিযোগ দাখিলের কার্যক্রম। কমিশনে গুম সংক্রান্ত অভিযোগ জমা দেওয়ার সময়সীমা ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকলেও এখন সে সময়সীমা ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে জানান মইনুল ইসলাম চৌধুরী।