রাজধানী জেরুজালেমে আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গ্যালেন্ত বলেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড। ফিলিস্তিনিরা সেখানে বসবাস করেন এবং ভবিষ্যতেও উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ থাকবে তাদের হাতেই। গাজার ভবিষ্যৎ সরকার অবশ্যই সেখান থেকেই উদ্ভূত হবে।’
‘আমরা এটুকু বলতে পারি যে আমাদের অভিযান শেষ হওয়ার পর গাজা থেকে আর কোনো নাশকতার হুমকি আসবে না। সেই সঙ্গে আরও বলতে পারি, একটি সশস্ত্র সামরিক গোষ্ঠী হিসেবে হামাস আর গাজা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, গাজায় ভবিষ্যতে বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে ইসরায়েল।
২০০৭ সাল থেকে গাজায় ক্ষমতাসীন আছে হামাস। সশস্ত্র এই রাজনৈতিক গোষ্ঠীটি ফিলিস্তিনের অপর অংশ পশ্চিম তীর অঞ্চলে ক্ষমতাসীন প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি (পিএ) বা ফাতাহ সরকারের বিরোধী। পিএ দ্বিরাষ্ট্র সমাধানে আস্থাশীল হলেও হামাস তাতে বিশ্বাসী নয়। নীতিগত ভাবে এই গোষ্ঠীটি ইসরালকে নির্মূল করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং বিদেশি নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত ১০০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখন ও চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।
গাজা উপত্যকার প্রায় সব হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে। উপত্যকায় বসবাসরত ২০ লাখ ফিলিস্তিনির অধিকাংশই ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী শিবির এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূলের আগ পর্যন্ত সেখানে অভিযান চলবে।