ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের বিচ্ছিন্নতা বা পৃথকীকরণ প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডান। একইসঙ্গে এই দুটি অঞ্চলই ‘একক ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্প্রসারণ’ বলেও জানিয়ে দিয়েছে দেশটি।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ মঙ্গলবার গাজা উপত্যকা থেকে পশ্চিম তীরকে আলাদা করার যে কোনও প্রচেষ্টাকে তার দেশের প্রত্যাখ্যানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
কমিটি অন দ্য এক্সারসাইজ অব দ্য ইনঅ্যালাইনেবল রাইটস অব দ্য প্যালেস্টানিয়ান পিপল (সিইআইআরপিপি)-এর প্রধানের কাছে পাঠানো এক বার্তায় পশ্চিম তীর এবং গাজা উভয়ই ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্প্রসারণ’ বলেও নিশ্চিত করেছেন বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
এই কমিটির কাছে পাঠানো বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘সকল ঐশ্বরিক ধর্মের মূল্যবোধের পাশাপাশি আমাদের সাধারণ মানবিক মূল্যবোধও বেসামরিক লোকদের হত্যা করাকে স্বীকৃতি দেয় না।’
তিনি উল্লেখ করেন: ‘পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে লঙ্ঘন করেছে এবং এটি এই অঞ্চল ও বিশ্বে আরও সহিংসতা ও ধ্বংসের সূচনা করবে।’
২৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস পালিত হচ্ছে। জর্ডানের বাদশাহ বলেন, (অন্য বছরের তুলনায়) ‘ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে এই দিবসটি সামনে এসেছে এবং এই দিবসটি যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য করার জন্য সমগ্র বিশ্বকে আহ্বান জানাচ্ছে’।
বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ‘গাজার কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করা বা এতে বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা এবং পশ্চিম তীরকে গাজা থেকে আলাদা করার’ বিষয়টি জর্ডান প্রত্যাখ্যান করছে বলেও পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আনাদোলু বলছে, ফিলিস্তিনি জনগণ এবং বিশ্বব্যাপী তাদের সমর্থকরা বুধবার ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে এই আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উদযাপন করবে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনকে ‘আরব’ এবং ‘ইহুদি’ রাষ্ট্রে বিভক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
পরে ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর দিবসটি উদযাপনের আহ্বান জানায়। এর ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালে একই তারিখে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর থেকে এই দিনটি আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও চার হাজার।
অবশ্য গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চারদিনের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল।
যদিও ইসরায়েল হুমকি দিয়ে রেখেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেই তারা আবারও গাজায় হামলা চালানো শুরু করবে।