অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গত ৫০ দিনে অন্তত ৬৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। শনিবার গাজার গণমাধ্যমবিষয়ক সরকারি কার্যালয় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে সাংবাদিকদের প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছে।
টেলিগ্রামে নিজেদের চ্যানেলে দেওয়া এক পোস্টে গাজার গণমাধ্যমবিষয়ক সরকারি কার্যালয় নিহত সাংবাদিকদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেছে। এতে নিহত সাংবাদিকদের ‘‘সত্যের শহীদ’’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত সাতজন নারী সাংবাদিক রয়েছেন।
এদিকে, সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) শনিবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত (২৫ নভেম্বর) ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৩ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত সাংবাদিকদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি। এছাড়া ইসরায়েল ও লেবাননিজ সাংবাদিকও চলমান এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন।
১৯৯২ সাল থেকে সংঘাতে দায়িত্বপালনের সময় হতাহত সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ ও পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক এই সংগঠন। তারা বলেছে, সংঘাতে হতাহত সাংবাদিকদের পরিসংখ্যান প্রকাশের সময় থেকে এখন পর্যন্ত যেকোনো সংঘাতের প্রথম এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যক সাংবাদিকের প্রাণহানির রেকর্ড হয়েছে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে।
সিপিজে বলেছে, চলমান যুদ্ধে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচ সাংবাদিকের প্রাণহানি ঘটেছে গত ১৮ নভেম্বর। এর আগে গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর দিনেই সর্বোচ্চ ৬ সাংবাদিকের প্রাণহানির রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে যে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৬ জন ফিলিস্তিনি, ৪ জন ইসরায়েলি এবং তিনজন লেবাননিজ। এছাড়া এই যুদ্ধে আহত হয়েছেন আরও ১১ সাংবাদিক। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩ জন এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জনকে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের পর থেকে হাসপাতাল, বাসস্থান এবং উপাসনালয়সহ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থাপনায় টানা বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণহানি এক হাজার ২০০ জনে পৌঁছেছে বলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে। যদিও প্রথমে হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল ইসরায়েল।