শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সেখানকার সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
বিবৃতির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও এবং তার সঙ্গে একটি পোস্টও শেয়ার করেছে আইডিএফ। সেই পোস্টে বলা হয়েছে, গাজার উপত্যকার মধ্যাঞ্চল বুরেইজিরে সালাহ আ-দীন রোডে মাটির নিচে অবস্থিত কারখানাটিতে বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের স্থল বাহিনীর ৩৬ তম ডিভিশনের ইয়াহালোম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট এবং বিমান বাহিনীর শালদাগ ইউনিট।
এই অস্ত্র কারখানাটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ। এসব সুড়ঙ্গ দিয়ে গাজার বুরেজি, মাঘাজি এবং নুসেইরাতের মতো এলাকাগুলোতে খুব সহজেই যাওয়া যায়।
ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, সেসব সুড়ঙ্গের একটি দিয়ে কারখানাটিতে প্রবেশ করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। কথিত সেই কারখানাটিতে বেশ কিছু গোলা, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের সরঞ্জাম, বিস্ফোরক এবং এসব অস্ত্র প্রস্তুতের যন্ত্র পাওয়া গেছে। ভিডিওচিত্রে তা দেখানোও হয়েছে।
এক্সপোস্টে আইডিএফ জানিয়েছে, হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের জন্য অস্ত্রের মূল যোগান আসত এই কারখানাটি থেকেই। ইয়াহালোম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ও শালদাগ ইউনিটের সেনারা কারখানা, কারখানার সরঞ্জাম এবং সেটির সঙ্গে সংযুক্ত সবগুলো সুড়ঙ্গ ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে আইডিএফ।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং বিদেশি নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত ১০০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখন ও চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।
গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে আটক রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধার এবং হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার আগ পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।