ভুক্তভোগীদের স্বজনরা জানান, গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী রিফাইতপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক বেলালের মায়ের চল্লিশা উপলক্ষে মজলিসের আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় এক হাজার মানুষ অংশ নেন। তবে রাত থেকে অনেকেরই ডায়রিয়া, বমি ও পেটের পীড়া শুরু হয়।
প্রথমে অনেকে বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকেন।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল ও ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১২৪ জন, যাদের মধ্যে ৫১ জনকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফুলছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৫ জন, এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আব্দুল হাই ও মিম আক্তার দম্পতি বলেন, “আমাদের আত্মীয়ের মজলিসে দাওয়াত খাওয়ার পর মাঝরাত থেকে দুজনের ডায়রিয়া শুরু হয়। আমাদের আরও অনেক আত্মীয়ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন।”
অন্য রোগীরা জানান, কারও মধ্যরাতে, আবার কারও সকালে বা দুপুরে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হয়। বিশেষ করে শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডা. আরিফা খানম বলেন, “খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে রোগীরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সবাইকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।”
ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, “মজলিসের আলুর ডাল খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছেন। আমরা স্বল্প জনবল দিয়েও সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। গুরুতর অসুস্থ দুইজনকে রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, খাদ্যের মান নিয়ে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। প্রশাসন যেন এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।