পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গভীর রাতে মেসেজ না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। গতকাল সোমবার (১৪ নভেম্বর) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির প্রস্তুতি সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।
ছাত্রলীগের নেতাদের এসএমএসে বিরক্তি প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা রাত যেসব মেসেজ আসে, সকালে ঘুম থেকে উঠে সেগুলো তিনি দেখেন। ঐ সময় এত মেসেজ পড়তে পড়তে সময় ফুরিয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি ছাত্রলীগকে সতর্ক করে বলেন, ‘দয়া করে কেউ মেসেজ দেবেন না’। এ সময় ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেন দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ঘুর ঘুর করে’—এ প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের জন্য আমাদের নেত্রী একটি সুসজ্জিত কার্যালয় তৈরি করে দিয়েছেন। সেটা হলো আমাদের ২৩ নম্বরে (বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ)। তারা তদবির করলে ঐ অফিসে করবে।’
নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপি দুর্বল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপিকে আমাদের দুর্বল করার প্রয়োজন নেই। তাদের নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তারা নিজেরাই দুর্বল হচ্ছে। ‘বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে আওয়ামী লীগ ঈর্ষান্বিত’ সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আসুন, তখন দেখা যাবে কার জনপ্রিয়তা বেশি। ‘দেশে গণতন্ত্র নেই’ মর্মে বিএনপি মহাসচিবের এই অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রাখেন, ‘যাদের দলের ভেতরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে। তাদের জাতীয় সম্মেলন কবে হয়েছে, মনে আছে? তাদের জাতীয় কমিটির সভা কবে হয়েছে, মনে আছে? তাদের দল ও সংগঠন করার দরকার নেই। তাদের দরকার নালিশ করা—এ জন্য কয়েক জন লোক দরকার। সকাল হলেই বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে নাস্তা করা আর নালিশ করা—এই হলো তাদের কাজ।’
- ‘শাখা-সহযোগী সংগঠনের পদে থাকলে উপকমিটিতে নয়’
উপকমিটির সদস্যদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি যদি অন্য কোনো শাখার কর্মকর্তার পদে থাকেন, তাহলে উপকমিটিতে থাকতে পারবেন না। যদি জেলা, উপজেলা, থানা কমিটির কর্মকর্তা হন, তাহলেও সম্ভব না।’ জেলার সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তা উপকমিটিতে থাকতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক কর্মী বিনা পরিচয়ে, বিনা পদে এখানে ঘুরে বেড়ায়। তাদের আমরা কোনো পদ দিতে পারি না। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ একাধিক পদে রয়েছে।’
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রীর নির্দেশনা আছে সম্মেলনকে ঘিরে বর্ণাঢ্য আয়োজন, সাজসজ্জা করা হবে না। মানুষ কষ্টে আছে, সংকটে আছে। তাই এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের বিলাসবহুল সম্মেলন শোভা পায় না।’ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় আরো বক্তব্য রাখেন—ডাক ও টেলি যোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণাপত্র উপকমিটির সভায় যোগ দেন। এ সময় ঘোষণাপত্র উপকমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।