সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন’। কিন্তু আইনটি সম্পর্কে সাংবাদিক নেতারা ও সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নানাভাবে আপত্তির বিষয়টি সরকারকে জানিয়েছেন। তাড়াহুড়ো করে আইনটি পাস না করে আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। অনেকে আবার আইনটির যেসব ধারায় আপত্তি রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে নিজেদের পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের অধিকাংশ ধারা ও উপধারায় মালিকপক্ষ ও সাংবাদিকদের অধিকার খর্ব হবে।
সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) পৃথক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, নতুন গণমাধ্যমকর্মী আইনের প্রয়োজন নেই। প্রস্তাবিত আইনটির ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টিই সাংবাদিকবান্ধব নয় বলে সম্পাদক পরিষদ, সিনিয়র সাংবাদিক এবং সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা মতামত ব্যক্ত করেছেন। এ আইন পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন তারা। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, পরীক্ষাধীন প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনটি পরিবর্তন-পরিমার্জন করে যাতে সাংবাদিকদের স্বার্থ পুরোপুরি সংরক্ষিত হয় সে ব্যাপারে সরকার একমত। সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
নামেই আপত্তি
যেসব ধারা-উপধারা নিয়ে আপত্তি
সাংবাদিক নেতারা জানিয়েছেন, ১৯৭৪ সালের নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ অর্ডিন্যান্স-এ ধারা ছিল ২১টি, ২০১৮ সালের খসড়া আইনে ধারা ছিল ২৩টি আর ২০২১ সালের (২০২২ সালে সংসদে উপস্থাপিত) আইনে ধারা ৫৪টি। নতুন প্রস্তাবিত আইনে এমন কিছু সংযুক্ত করা হয়েছে যে বিষয়গুলো বিধি দিয়ে বা ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ দিয়েই কার্যকর সম্ভব। প্রস্তাবিত আইনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জারি করে নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অর্ডিন্যান্স। এ আইনের অধীনেই সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বোর্ড কর্মচারীদের ওয়েজবোর্ড হয়ে আসছিল।
১৯৭৪ সালের আইনটি সাংবাদিকতা পেশাকে কয়েকটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ আইন সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যম কর্মচারীদের অধিকার ও বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়গুলো শ্রম আইনের মধ্যে রেখেও কিছু বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত করেছিল। এগুলো হচ্ছে- সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যম কর্মচারীদের জন্য পৃথক ওয়েজবোর্ড গঠন, পেশার সংজ্ঞায়ন, বিশেষায়িত বলে কতিপয় বিশেষ সুবিধা নিশ্চিতকরণ। সে সময় দেশে শ্রম আইন বহাল থাকলেও আইনটি করা হয়েছিল এ বিশেষ লক্ষ্য নিয়েই।’ ‘ওই সময় এ আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছিল শিল্প আইন ১৯৬৯ এবং এমপ্লয়মেন্ট অব লেবার অ্যাক্ট ১৯৬৫- এ দুই আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে। এ আইন দুটি এখন নেই্। তবে নতুন আইন করতে হলে আগের চেতনা ধরে রাখতে হবে।’
আইন নিয়ে পর্যবেক্ষণ
প্রস্তাবিত আইনটির কিছু ধারা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন মনজুরুল আহসান বুলবুল। প্রথমত, তিনি আইনটির সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি শর্তাবলি) আইন, ২০২১’ এর পরিবর্তে ‘সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম কর্মচারী (চাকরি শর্তাবলি) আইন, ২০২১’ করার পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। এতে করে যাদের জন্য এ আইন, সেই পেশাজীবীদের বিষয়টি স্পষ্ট হয় বলে মনে করেন তিনি।
আইনটির ১.২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এটা বেসরকারি গণমাধ্যম, গণমাধ্যম মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে’। ধারাটির পর্যবেক্ষণে এই সাংবাদিক নেতা বলেছেন, ‘যারা ওয়েজবোর্ডের সুপারিশকৃত আওতায় বেতন-ভাতা পান বা পাবেন তাদের সবার বেলায় এ আইন প্রযোজ্য হবে।’ আইনের ২.২+৩ ধারায় গণমাধ্যম আদালত বিষয়ক উপধারার কথা উল্লেখ আছে। এ উপধারা বাতিল করা প্রয়োজন বলে মনে করেন মনজুরুল আহসান বুলবুল। তার কথায়, ‘গণমাধ্যম আদালত নিয়ে ভিন্নমত আছে।’
এছাড়াও আইনের ধারা ৩-এ প্রাধান্যের জায়গায় বলা হচ্ছে, ‘বলবৎ অন্য আইনে যা-ই থাকুক, এ আইন প্রাধান্য পাবে।’এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম কর্মচারীদের অধিকার ও বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়গুলো শ্রম আইনের আওতায় রেখে বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত করতে এ আইনের প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে।’ চাকরির শর্তাবলিতে ধারা ৪ নিয়েও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তিনি। তার মতে, ‘এ আইনে যা-ই থাকুক না কেন মালিক-শ্রমিক বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত শ্রম আইন (এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬) প্রাধান্য পাবে।’
নতুন এই আইনের ধারা ৫-এ গণমাধ্যম কর্মীদের শ্রেণিবিভাগ ও শিক্ষানবিশ প্রসঙ্গ এনে তিন ধরনের কর্মচারীর কথা বলা হয়েছে- অস্থায়ী, শিক্ষানবিশ ও স্থায়ী। মনজুরুল আহসান বুলবুল বলছেন, ‘অস্থায়ী বা সাময়িক কর্মী থাকবে না। ৫.২ উপধারা বাতিল করতে হবে। সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের নবীন কর্মচারীরা শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ পাবেন। ছয় মাস পর মূল্যায়ন শেষে এই কাল আরও ছয় মাস বাড়ানো যাবে। মূল্যায়ন শেষে স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে।’
সাংবাদিকদের কর্মঘণ্টা সম্পর্কিত ধারায় (ধারা ৮) বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের কর্মঘণ্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা। ১৯৭৪ সালের আইনেও তা ছিল। পেশার বিশেষত্ব বিবেচনা করে এ ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। বিশেষ পরিস্থিতিতে একজন রিপোর্টার, ডেস্কে কর্মরত সাংবাদিক বা আলোকচিত্র সাংবাদিককে ঘণ্টা হিসাবের বাইরেও কাজ করতে হয়। তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি বা অন্য বেসরকারি শিল্পের মতো সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা যেতে পারে বলে মনে করেন এই সাংবাদিক নেতা।
এছাড়াও মৃত্যুজনিত সুবিধা সম্বলিত ধারা ১১, ছাঁটাই সম্পর্কিত ধারা ১২, অব্যাহতি ধারা ১৩, দণ্ডপ্রাপ্তি সম্পর্কিত ধারা ১৪ এবং বরখাস্তের ধারা ১৫ নিয়েও পর্যবেক্ষণ দেন তিনি। তার মতে, ‘ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে চার মাসের টার্মিনেশন বেনিফিট, কর্মকালীন মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করে বাকি বিষয় প্রচলিত শ্রম আইনের সঙ্গে সমন্বয় করা যায়।’
আর স্বেচ্ছায় ইস্তফা প্রদানের ধারা ১৬ এবং পাওনা সম্পর্কিত ধারা ১৬:৩: ক/খ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এভাবে স্পষ্ট করতে হবে যে শ্রম আইন অনুযায়ী সব প্রাপ্যের অতিরিক্ত হিসেবে তারা এসব পাওনা পাবেন।’ চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ সংক্রান্ত ২০ নম্বর ধারাটি পুরোপুরি বাতিলের দাবি তুলেছেন তিনি। তার মতে, কোনও সাংবাদিক যত দিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার মতো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে যদি কোনও আর্থিক দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ প্রমাণিত না হয় ততদিন তাকে অবসর দেওয়া যাবে না। কারণ এটি বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা। যত সময় যায় তত সাংবাদিকরা অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হন। তাদের অকাল অবসর সাংবাদিকতাকেই দুর্বল করবে। তবে অন্য কর্মচারীদের বেলায় অবসরের বয়সসীমা হবে ৬৭ বছর।
একইভাবে ছুটি, চিকিৎসা, ভবিষ্যৎ তহবিল সম্পর্কিত ধারা ২১ সম্পর্কে তার পর্যবেক্ষণ ‘সরকারি ছুটির অনুসরণে সপ্তাহে দুই দিন ছুটি ঠিক রেখে কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা যায়। শ্রান্তি ছুটি হবে সবেতনে ৩০ দিন।’ চিকিৎসা ভাতার বিষয়ে নতুন আইনের ধারা ২৩-এ বলা হচ্ছে, এটি মালিকপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে তিনি চান, চিকিৎসা ভাতা নির্ধারণ করবে ওয়েজবোর্ড। এটি মালিকের ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া যায় না।
ন্যূনতম ওয়েজবোর্ড সম্পর্কিত ধারা ২৫-এ বলা হচ্ছে, ওয়েজবোর্ড গঠনে একজন চেয়ারম্যান, একজন মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, কর্মচারী সংগঠনের তিন জন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ওয়েজবোর্ডে সরকার একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত করবেন, যিনি হবেন আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। সংবাদমাধ্যমের মালিকের তিন জন প্রতিনিধি থাকবেন- একজন সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন, একজন টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন ও একজন অনলাইন মালিকদের সংগঠন থেকে।
সেইসঙ্গে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) থেকে তিন জন (সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইনের প্রতিনিধি), সংবাদপত্র প্রেস শ্রমিকদের একজন প্রতিনিধি, সংবাদপত্র সাধারণ কর্মচারীদের একজন প্রতিনিধি, টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যমের সাধারণ কর্মচারীদের একজন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মর্যাদার একজন এবং অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব মর্যাদার একজন প্রতিনিধি থাকবেন।
যা বলছেন সাংবাদিক নেতারা
নতুন গণমাধ্যমকর্মী আইন সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আইনটির যেসব জায়গায় আমাদের দ্বিমত রয়েছে সেগুলো তৈরি করেছি। যে কোনও সময় সেটি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটিতে দেওয়া হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, এটি পরিবর্তন-পরিমার্জন হবে। তাই আশা করছি সংশোধিত আকারে নতুন যে আইনটি হবে সেটি দ্বারা সাংবাদিক-মালিক কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
অপরদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী জানিয়েছেন, আইনের শিরোনামটি সাংবাদিকবান্ধব নয়। এটি পরিবর্তন করতে হবে। আইনে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এটি ফিরিয়ে দিতে হবে। আইনটির যেখানে যেখানে আপত্তি সেগুলো চিহ্নিত করে আমাদের সুপারিশগুলো প্রতিবেদন আকারে তৈরি রেখেছি। চাওয়ামাত্র তা জমা দেবো।
ডিইউজের অপর অংশের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী জানিয়েছেন, আমরা আপত্তি দিয়েছি। তথ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন কিছু ধারা-উপধারা পরিবর্তন হবে। সে কারণে আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন জানিয়েছেন, আইনটির ধারাগুলো আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার করতে হবে। আমরাও তা করছি।
এদিকে গত ২৫ এপ্রিল নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খানের সই করা বিবৃতিতে নেয়াব বলেছে, এ আইন পাস হলে শিল্প হিসেবে সংবাদপত্র আরও রুগ্ন হবে। নতুন এ আইনের কোনও প্রয়োজন নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াবের ধারাবাহিক দাবির কারণে সরকার ২০১৪ সালে সংবাদপত্রকে ‘শিল্প’ ঘোষণা করেছে। কিন্তু ‘শিল্প’ সম্পর্কিত প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সংবাদপত্র পাচ্ছে না।
গত ২৮ মার্চ জাতীয় সংসদে গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২ উত্থাপন করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের আইনি সুরক্ষা এবং দাবি নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে আদালত গঠনের বিধান রেখে বিলটির খসড়া উপস্থাপন করা হয়। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
নোয়াবের বিবৃতিতে বলা হয়, পঞ্চাশ থেকে সত্তরের দশকের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বাপর অবিস্মরণীয় ভূমিকা রয়েছে আমাদের সংবাদপত্রের। নব্বইয়ের দশকে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতেও সংবাদপত্রের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সাংবাদিকতা পেশা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষেত্রে এক ধরনের চাপ তৈরি করেছে। এর ওপর গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে শিল্প হিসেবে সংবাদপত্র আরও রুগ্ন হবে। সাংবাদিকদের জন্য তা মর্যাদাহানিকরও হবে।
নোয়াব আরও বলেছে, সংবাদকর্মীদের দেনা-পাওনা এবং যেকোনও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য শ্রম আদালত আছে। ‘বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল’ বাংলাদেশের সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বাক-স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করছে। কাজেই প্রচলিত শিল্প আইন, বাংলাদেশ শ্রম আইন, প্রেস কাউন্সিল এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মাধ্যমেই সংবাদপত্রের সব কার্যক্রম তদারক করা সম্ভব।
এ সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করে। গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের স্বার্থেই করা হচ্ছে। যদিও মালিকদের একটি পক্ষ গণমাধ্যমকর্মী আইন চান না। তিনি বলেছেন, প্রেস কাউন্সিল ও ডিএফপি কিন্তু সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরি সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে না। টেলিভিশন, রেডিও বা অনলাইনের সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্যও কোনও আইন নেই। এ আইন হলে যখন তখন ছাঁটাই বা নিয়োগপত্র না দেওয়ার মতো বিষয়গুলো সম্ভব হবে না। তখন বেতন, ভাতা, গ্র্যাচুইটি নিয়ম অনুযায়ী দিতে হবে।