তিনি বলেন, বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে, সেটির সাথে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সাথে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করব।’
বিএনপিকে ২০১৪ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে আনতে না পারাকে আওয়ামী লীগের ‘ব্যর্থতা’ হিসেবে অভিহিত করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমরা দায়িত্বে ছিলাম, আমাদের এই জায়গায় ব্যর্থতা ছিল যে, আমরা বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ব্যর্থ হয়েছি। ২০১৪ সালে এবং ২০২৪ সালে তাদেরকে নির্বাচনে আনতে না পারাটা আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল।’
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সবসময় নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার পথে হেঁটেছে। তারপরও আমি মনে করি আমরা যেহেতু সরকারে ছিলাম তাদেরকে আনতে না পারা আমাদের ব্যর্থতা। যদিও-বা তারা সব সময় আমাদের এভাবে ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেটি আমাদেরও ব্যর্থতা। এটি আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। এটা আমার দলীয় বক্তব্য নয়।
তিনি বলেন, বিএনপি অবশ্যই সব সময় নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যেহেতু আমরা দায়িত্বে ছিলাম আমাদের এ জায়গায় ব্যর্থতা ছিল যে বিএনপিকে আমরা একোমডেট করে নির্বাচনে আনতে ব্যর্থ হয়েছি।
রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের ভুল ছিল জানিয়ে দলটির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের ভুল ছিল, ভুল হয়। আমরা সেই ভুলগুলোকে স্বীকার করি এবং ভুল থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে।’
দেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগ তৈরি আছে জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে, সেটির সাথে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সাথে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করব।’
‘আজকে মানুষের মধ্যে যে হতাশা, দ্রব্যমূল্য নিয়ে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে, ভবিষ্যৎ নিয়ে, আমি আশা করব, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই হতাশা কেটে যাবে, দেশ ভালো থাকবে। দেশে একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে আসবে। আমরা সবাই এ লক্ষ্যে একযোগে করতে চাই।’-বলেন হাছান মাহমুদ।
বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি নেতাদের অনেক বক্তব্যের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একমত পোষণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির অনেক বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত। আমরা এক-এগারোর সরকারের সঙ্গে একযোগেই কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছিলাম এবং গণতন্ত্র ফিরে এসেছে।
সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কিংবা বিএনপির মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্যগুলো দিচ্ছেন, অনেকগুলোর সঙ্গে আমরা একমত।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা?’-এই যে প্রশ্ন তুলেছেন, আমি এটির সঙ্গে একমত। এমনকি ছাত্রলীগকে কাগজে নিষিদ্ধ করার পর সেটির বিরুদ্ধেও তারা বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবসহ তাদের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা-এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ হওয়ার পর বিএনপি যে বক্তব্য, সেই বক্তব্যের সঙ্গেও আমরা একমত। একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমি হামলা করলাম, সেই রাজনৈতিক দলের অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হলো-এ নিয়ে সরকারের কোনও বক্তব্য খুঁজে পাচ্ছি না।’