বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন’ করতে পারে— এমন যে কোনো ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিকল্প হাতে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতররের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এ সময় বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে আসা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্ন ও উত্তরের বিস্তারিত ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নষ্ট করার জন্য দায়ী বা জড়িত। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে। তাই আমরা অন্য ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিকল্পটি ধরে রাখি যখন আমরা মনে করি যে ভিসানীতি দেওয়া প্রয়োজন।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিজের ও দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, মার্কিন কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, প্রতিটি দেশকে অবশ্যই সমস্ত কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া কর্মীদের উপর যে কোনও আক্রমণ প্রতিরোধে সমস্ত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা আশা করি সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশের সব বিদেশি মিশন এবং কর্মীদের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবে।
এর আগে, গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে পিটার হাস জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা হওয়া গণমাধ্যমের ওপরও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে ওয়াশিংটন। ঠিক কতজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সে প্রশ্নে পিটার হাস বলেন, কতজনের ওপর দেওয়া হয়েছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থেই ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
কোন পর্যায়ের ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে সে ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সরকারি দল ও বিরোধী দলের সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগ এবং এমনকি গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।’ তিনি যোগ করেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, এমন কার্যক্রম ও তৎপরতার ভিত্তিতে গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
এ সময় পিটার হাস বলেন, তিনি নিজের এবং দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনো উদ্বিগ্ন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিধিনিষেধের আওতায় ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা ছাড়াও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যও রয়েছেন।