আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। হঠাৎ তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতিতে গ্রেফতার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন দলটির প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে তাদের কাছের অনুসারীরাও। আওয়ামী লীগের মতো লাপাত্তা হয়ে গেছেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারাও। জোটের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী দুই নেতা গ্রেফতার হলেও বাকিদের খোঁজ মিলছে না।
১৪ দলীয় জোটের মধ্যে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে ধরা হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাসেদ খান মেননকে।
কোটা আন্দোলন চলা অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এই দুই প্রভাবশালী নেতা। আন্দোলন দমাতে এই দুই নেতা কারফিউ জারিরও পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সরকার পতনের পর থেকেই এই দুই নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন৷ তাদের কোথাও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মগোপনে থানা ইনুর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচটি হত্যা মামলা হয়েছে।
জাসদ সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের ১৪টি জেলায় থাকা কার্যালয়গুলোতে হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ হামলা হয়েছে হাসানুল হক ইনুর গ্রামের বাড়িতে৷
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জাসদের এক নেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, দলীয় শীর্ষ নেতারা এখন নিরাপদ অবস্থানে আছেন। বিভিন্ন স্থানে হামলা-মামলা হয়েছে৷ এজন্য আমরা এখন নিষ্ক্রিয় আছি। দলের শীর্ষ নেতারা সব কিছু পর্যবেক্ষণ করছেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর সচল পাওয়া থাকলেও একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি। সরকার পতনের পর অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে রাশেদ খান মেননকেও।
বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে, জাতীয় পার্টির একাংশ, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল) প্রধান দীলিপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টির প্রধান নুরুর রহমান সেলিম, গণআজাদী লীগ প্রধান হাজি আবদুস সামাদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বিএসডি) প্রধান রেজাউল রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র প্রধান জাকির হোসেন, গণফোরাম প্রধান ড. কামাল হোসেন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ প্রধান মোজাফফর আহমেদরা আত্মগোপনে রয়েছেন। ৫ আগস্টের পর এসব নেতাদের প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
তবে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকা দল ও তাদের শীর্ষ নেতাদেরও শাস্তি দাবি করেছেন। তাদের দাবি, শুধু আওয়ামী লীগ একাই নয়, তাদের শোষণের সঙ্গী ছিল আরও ১৩টি দল। এদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত।