ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সাজে সজ্জিত হয়ে ১৯২০ জন খুদে বক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পরিবেশন করে। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।
খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খুদে শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এর আগে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে খুলনা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ও মহানগর কমান্ড, কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় প্রশাসন, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, জেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠন এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাহিত্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খুলনা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আলোকসজ্জা ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সম্বলিত তোরণ স্থাপন করা হয়।
এছাড়া খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। মহান মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা ছিল এই ভাষণ। এ ভাষণের কথামালা বাঙালির হৃদয়ের সাহস সঞ্চার করে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এ দেশের মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তাকে ১৪ বছর কারাগারে বন্দী থাকতে হয়েছে এবং দুইবার ফাঁসির মঞ্চ পর্যন্ত যেতে হয়েছে। জাতির পিতা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছর লড়াই-সংগ্রামকালে জেল, জুলুম ও অত্যাচার সহ্য করে সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. ইকবাল, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলমগীর কবির ও সরদার মাহাবুবার রহমান।
স্থানীয় পত্রিকাগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। খুলনার সব উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে দিবসটি উদযাপন করা হয়।