রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৪ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার (১৯ জুন) রাত ৮টা ১০ মিনিটে হাসপাতাল ছাড়ে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি। এর কিছুক্ষণ পর গুলশাসের বাসভবন ফিরোজায় এসে পৌঁছান তিনি।
বিকেলেই বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছিলেন, দলীয় চেয়ারপারসন সন্ধ্যার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাবেন। এর পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতাল ও ফিরোজার সামনে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করতে থাকেন।
গত ১৪ এপ্রিল গুলশানের বাসভবনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। ৩ মে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তিনি করোনা থেকে সেরে ওঠেন ৯ মে। ৩ জুন চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে সিসিইউতে থেকে কেবিন ফিরিয়ে আনা হয়। তবে কেবিনে থাকা অবস্থাতেই দুদফা জ্বরে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া।
এর মধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়। নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনও করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি সরকার। জানানো হয়, বিএনপি নেত্রী একাধিক দণ্ডিত মামলার আসামি হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার সুযোগ নেই।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, খালেদা জিয়া করোনা পরবর্তী নানান জটিলতা এবং আগের অন্যান্য বার্ধক্যজনিত অসুখবিসুখে বিপজ্জনক অবস্থান রয়েছেন। কারণ তিনি করোনা থেকে মুক্ত হলেও আথ্ররাইটিসসহ পুরোনো অনেকগুলো রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় সেগুলোর জটিলতা বেড়েছে। এর মধ্যে হার্ট, কিডনি ও লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তার পুরোনো অসুখ রয়েছে। এ সব রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার ২০২০ সালের মার্চ মাসে মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয়।
প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হলেও পরে দুই দফায় আরও ছয় মাস করে সময় বাড়ানো হয়।
এই মুক্তির ক্ষেত্রে দুটি শর্তের কথা জানানো হয়েছে সরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে, বিএনপি নেত্রীকে চিকিৎসা নিতে হবে দেশেই আর তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ সীমিত।