সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাতের ফলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনজন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, যা ঘটছে তা তো আমরা জানি। এটা আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেটাই আমাদের দলের প্রতিক্রিয়া। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আশেপাশের দুই/তিনটা গ্রামের জনগণ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমাদের জন্য এটা উদ্বেগের। গোলা, মর্টারের শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও পড়ছে। আমাদের তিনজন (নাগরিক) ইতোমধ্যে আহত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব ব্যাপারে নিশ্চয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
কাদের বলেন, আগস্টের ২৫ তারিখে যখন মিয়ানমারের জনগণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে, আমাদের এয়ারস্পেস অনেক সময় লঙ্ঘিত হয়েছে তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা ছিল, তারা যতই প্রভোকেট করুক আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব না। আমরা যুদ্ধের পক্ষে নয়। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। এখানে ব্যাপারটা হলো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। এটা তাদের ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট। আমরা আহ্বান করব, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আতংকের কারণ হয় এমন কনফ্লিক্টের সমাধান তাদের নিজেদেরই করা উচিত। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটা সমাধান হতে পারে।
তিনি বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত গতকাল আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, আমি তাকেও এ ব্যাপারে বলেছি আপনাদের কথা তারা শুনে বলেই সারা বিশ্ব জানে। কাজেই আপনারা তাদেরকে যুদ্ধ থেকে, ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট থেকে দূরে থাকার জন্য এবং তাদের বিরোধ বাংলাদেশে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করুক এই বিষয়টা আপনাদের একটু দেখা উচিত। যেহেতু আপনারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার সে হিসেবে আপনাদের সহযোগিতার আহ্বান আমরা জানাচ্ছি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও যদি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চায় সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পলিসি কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছেন যে আমরা সে উদারতা দেখানোর ব্যাপারটা আমরা এফোর্ট করতে পারবো না। এমনিতেই একটা বোঝা, তারপর আরেক বোঝা এটা আর সম্ভব নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণকাণ্ডের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বিভিন্ন ভাতৃপ্রতীম, সহযোগী সংগঠন আছে। এই দলের ভিতরে শতভাগ ভালো মামুষ এই দাবি আমরা করতে পারি না। এর মধ্যে খারাপ কাজও কিছু লোক করে। খারাপের কাজের জন্য আমাদের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এই, আমরা খারাপ কাজটা প্রশ্রয় দেই না। আইনের আওতায় আসার মত যে অপরাধ তা আইনের আওতায় এনেই করা উচিত। এই পর্যন্ত অনেক দৃষ্টান্ত আছে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর যারা খারাপ কাজ করেছে, যারা অপরাধ করেছে তারা কেউই পার পেয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, আবরার হত্যার বিচার হয়েছে, বিশ্বজিৎ হত্যায়ও কাউকে বিচারহীনতা অবস্থায়, ইম্পিউনিটি যে কালচার সেটা আমরা গড়তে দেয়নি। এটা সবার জানা আছে। এখন কথা হলো একটা দলে ভালোর সাথে খারাপ লোকও থাকতে পারে। খারাপ কাজও করতে পারে কিন্তু দল সেটাকে কিভাবে নিচ্ছে। দল কি সে অপরাধ কে প্রশ্রয় দিচ্ছে? দল কি সে অপরাধের ব্যাপারে উদাসীন? আমরা তা নই। আবারও আমি সেটা দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করতে চাই।