বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) প্রকাশ করেছে।
বিবিএসের তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে, যা আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর শহরে সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে যে পণ্য ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছিল, এ বছরের সেপ্টেম্বরে তা কিনতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৬৯ পয়সায়। আবার গত বছর একই সময়ে যে খাবার কিনতে হয়েছিল ১০০ টাকায় এ বছর সেপ্টেম্বরে তা কিনতে হয়েছে ১১২ টাকা ৩৭ পয়সায়।
বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি। তবে খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৮২ শতাংশের মধ্যে। আবার শহরের চেয়ে গ্রামের মূল্যস্ফীতি বেশি। গ্রাম এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ, খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে গ্রামের তুলনায় শহরের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কম। শহর এলাকায় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক শূন্য এক শতাংশ, খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যে ৮ দশমিক ১২ শতাংশ।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠেছিল, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপর জুন ও জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে। তা জুন মাসে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও জুলাইয়ে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়। তবে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যায়। এ মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
দেশে গত আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যায়। এ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতির এই হার ১১ বছর সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল।
এদিকে, দুর্বল মুদ্রানীতির কারণে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার চারটি কারণ চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটির মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার মূল কারণগুলো হলো- অভ্যন্তরীণ জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়া, দুর্বল মুদ্রানীতি, টাকার অবমূল্যায়ন ও আমদানি কমে যাওয়া।