বিশ্বব্যাপী যেভাবে খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ছে তাতে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর প্রকৃত আয় আরও নিচে নেমে যাবে। কোভিড-১৯-এর প্রভাব কাটতে না কাটতেই শুরু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অসমতা ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে চলতি বছর বিশ্বের আরও প্রায় ২৭ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে।
তাতে সব মিলিয়ে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৮৬ কোটি, যাদের দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯০ ডলারের নিচে। অক্সফামের ‘দ্য অ্যাসল্ট অব অস্টিয়ারিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে নারী ও শিশুরা। কারণ করোনার প্রভাব শুরুর পর থেকে বাড়িতে নারীদের কাজের পরিমাণ বেড়ে গেছে। পরিবারকে সময় দেওয়া এবং গৃহস্থালি কাজে তাদের বেশি সময় দিতে হয়েছে। অক্সফামের মতে, বিভিন্ন দেশে পানিসহ বিভিন্ন জরুরি খাতে ব্যয় কমার কারণে খাটনি বেড়েছে নারীদের। ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় নারীদের কথা মাথায় রাখা উচিত বলে মনে করে অক্সফাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রতি পাঁচটি দেশের মধ্যে অন্তত চারটি দেশ কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অবলম্বন করেছে। এসব দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার মতো খাতে ব্যয় হ্রাস করা হচ্ছে। কিন্তু এসব দেশের সরকার কর হার বাড়াতে পারছে না। তবে ব্যয় সংকোচন বা কৃচ্ছ্রসাধন অনিবার্য নয় বলেই মনে করে অক্সফাম। সরকার যেমন ব্যয় হ্রাস করে মানুষের ক্ষতি করতে পারে, তেমনি যাদের কর দেওয়ার ক্ষমতা আছে, তাদের ওপর কর আরোপ করতে পারে। বিষয়টি হচ্ছে, ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে যে পরিমাণ অর্থ সাশ্রয়ের চিন্তা করছে, বিশ্বের কোটিপতিদের ওপর অনুক্রমিক কর আরোপ করে তার চেয়ে অন্তত ১ লাখ কোটি ডলার বেশি আয় করা সম্ভব।