খাগড়াছড়িতে হাটের দিন হলেও বাজারে লোকজনের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করায় এমনটি হয়েছে। এছাড়া খাগড়াছড়ি সদরে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর পর্যাপ্ত টহল অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) খাগড়াছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাটবারে তুলনামূলক কম লোক এসেছেন। তার মধ্যে পাহাড়িদের উপস্থিতি একেবারেই কম। পাংখেয়া পাড়া সড়কের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে। ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
খাগড়াছড়ি বাজারের ফল ব্যবসায়ী মো. রুবেল বলেন, বাজারে পাহাড়ি ক্রেতা কম। হাটবারের তুলনায় বেচাকেনাও কম। মানুষের মাঝে আতঙ্ক থাকায় তারা বাজারে আসছেন না।
হাটে তরিতরকারি বিক্রি করতে আসা হিরণ জ্যোতি ত্রিপুরা বলেন, সহিংসতার পর থেকেই মানুষ ভয়ে আছে। হাটে লোক নেই। বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না।
বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মো. কামাল হোসেন জানান, হাটবারে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাহাড়ি বা বাঙালিরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন তরিতরকারি হাটে নিয়ে আসেন। আজ বাজারে তেমন সবজি আসেনি। দামও একটু বেশি।
এছাড়া মানুষের মধ্যে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা থাকলেও খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। খাগড়াছড়ি থেকে সব সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। গুজবের কারণেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সুজন কান্তি বড়ুয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসারের পর্যাপ্ত টহল অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়িতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষকের নাম আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা। তিনি জেলা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই স্কুলের অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রদায়ের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়ক, মহাজন পাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় সদর উপজেলায় এখনো ১৪৪ ধারা জারি ছিল।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের কাজে বাধা এবং ধর্ষণের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।