অবশ্য অধ্যয়নকেন্দ্রটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমোদন এখনো দেওয়া হয়নি বলে ইউজিসির দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শনিবার প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তবে বিধিমালা সংশোধনের পর কেন্দ্রটির কার্যক্রম কীভাবে চলবে, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি তাঁরা। এরই মধ্যে গত ২১ নভেম্বর এ ব্যাপারে ইউজিসিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন একজন আইনজীবী।
আগে অনুমোদন ছাড়াই বাংলাদেশে বিদেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলত। তবে ২০১৪ সালে ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা’ জারি করা হয়। অবশ্য কিছু কারণে ২০১৬ সালের নভেম্বরে এটি স্থগিত করে মন্ত্রণালয়। ইউজিসি ক্যাম্পাস করে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালুর পক্ষে থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বর্তমান শীর্ষ পর্যায় থেকে অধ্যয়নকেন্দ্রের পক্ষে বলা হয়।
ইউজিসিকে দেওয়া এক চিঠিতে এপিইউবি বলেছে, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক, সেখানে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়কে লাভজনকসহ আরও কিছু সহজ শর্তে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংগঠনটি বলছে, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাবে না। কিন্তু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, অধ্যয়নকেন্দ্র-সংক্রান্ত বিধি অনুযায়ী উদ্বৃত্ত অর্থসম্পদ উদ্যোক্তা, স্থানীয় প্রতিনিধি ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন হবে। এটি ‘দ্বৈতনীতি’।
ইউজিসি সূত্র জানায়, খসড়া বিধিমালা অনুযায়ী বিদেশি মূল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শাখা ক্যাম্পাস খোলা যাবে। যৌথ উদ্যোক্তা থাকতে পারবে না। আবার যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ক্যাম্পাস খুলবে, তাদের দেশের আইনেও এ ব্যাপারে অনুমোদন থাকতে হবে। শাখা ক্যাম্পাসের প্রধান হবেন মূল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগকৃত একজন সহ-উপাচার্য, ভাইস প্রেসিডেন্ট বা ভাইস রেক্টর। শাখা ক্যাম্পাস থেকে লেখাপড়া শেষে মূল বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ পাবেন শিক্ষার্থীরা।
ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলে, এটি বাস্তবতা। তবে দেশে অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে। তাই নতুন একটি ধারা শুরু করতে হলে অনেক পর্যালোচনা-আলোচনা প্রয়োজন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন একটি আইন দিয়ে পরিচালিত হয়, সে রকম একটি পরিপূর্ণ আইন দিয়ে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলতে হবে। অ্যাডহক ভিত্তিতে অনুমোদন দিলে আপত্তি উঠবে। তাই ভালোমন্দ দেখে এটি করতে হবে।