দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম। ডিএমপি’র মাসিক অপরাধ সভায় তিনি ক্রাইম ও গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ও থানার ওসিদের বেশকিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন। সভায় অংশগ্রহণকারী ডিসিদের একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে। তারা তাদের কার্যক্রমের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। এসব দল যদি রাজনৈতিক কোনো প্রোগ্রাম করতে চায় তবে ডিএমপি’র কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু রাজনীতির নামে বিশৃঙ্খলা, আইনশৃঙ্খলা ও জানমালের নিরাপত্তার অবনতি, ভাঙচুর এবং অগ্নি সন্ত্রাসের মতো ঘটনা ঘটালে তাদেরকে কঠিনভাবে প্রতিহত করা হবে। মামলা-গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
অপরাধ সভায় নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের তৎপরতা নিয়ে বিস্তর আলোচনার পর নির্দেশনা দিয়েছেন কমিশনার। সভায় বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি মিরপুরে বড় ধরনের একটি বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়েই তারা এই বিশৃঙ্খলা ঘটায়। এতে করে বোঝা যায় তারা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে
এজন্য এই সংগঠনটি ঢাকা মহানগরে যাতে প্রকাশ্যে এমন কর্মসূচি না করতে পারে সেজন্য নজর রাখতে হবে। কোনোভাবেই তাদেরকে সংগঠিত হতে দেয়া যাবে না। এজন্য ডিসি, ওসিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে। সভায় বলা হয় অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলো যদি কোনো কার্যক্রম করতে চায় তবে কমিশনারের অনুমতি সাপেক্ষ করতে পারবে। কিন্তু যারা গণতান্ত্রিক মুভমেন্টের মধ্যে নাই বা যাদের নিবন্ধন নাই অথচ তারা আগুন সন্ত্রাসে বিশ্বাসীরা যদি আবার জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি শুরু করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তবে তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। প্রতিটা দলেরই ওয়ার্ড কমিটি আছে থানা কমিটি আছে। এই কমিটির বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন লেন এমনকি রাস্তাভিত্তিক কমিটি গঠন করতেছে।
ডিএমপি মনে করে নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য হলো তাদের রাজনৈতিক শক্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া। এতে ডিএমপি’র কোনো আপত্তি নাই। তবে এই শক্তিটা যখন প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে কাজ এবং শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, সরকার বিরোধী অনেকগুলো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আছে। কিছু প্রকাশ্য দল আর কিছু অপ্রকাশ্য দল। যারা সরকারবিরোধী ও জ্বালাও- পোড়াও এবং ভাঙচুরের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য কমিশনার সব ডিসি’র পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন। যেসব নাশকতাকারী গোপনে গোপনে সংগঠিত হচ্ছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য কালেকশন করতে হবে এবং নাশকতা কোথায় করবে সেই তথ্য পেলে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে সমস্ত থানার ওসিদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।