গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকালেই গণভবনে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে যায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে সেই ঘটনার বিস্তারিত জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন তিনি। সেদিনের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর জানান, ৫ আগস্ট সকাল গণভবনে একটি বৈঠক হয়।
বৈঠকে তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ওরা ভালো কাজ করছে, সেনাবাহিনী পারবে না কেন? তখন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, পরিস্থিতি যে পর্যায় গেছে, তাতে পুলিশের পক্ষেও আর বেশি সময় এমন কঠোর অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব না। অস্ত্র–গোলাবারুদ আর অবশিষ্ট নেই, বাহিনীও ক্লান্ত হয়ে গেছে।
এরপর সামরিক কর্মকর্তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন তিনি রেগে যান এবং বলেন, তাহলে তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেলো এবং গণভবনে কবর দিয়ে দাও।
ওই বৈঠক থেকে সামরিক কর্মকর্তারা শেখ হাসিনাকে গণভবনের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয় এবং তাকে আবারও পদত্যাগ করতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে ছোট বোন শেখ রেহানাও তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় শেখ রেহানা একপর্যায়ে শেখ হাসিনার পা জড়িয়ে ধরেন। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছিলেন না। পরে হাসিনার ছেলে জয়ের সঙ্গে কথা বলেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সামরিক কর্মকর্তারা জয়কে বলেন, প্রাণে বাঁচাতে হলে তার মায়ের (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করা ছাড়া উপায় নেই। আর এই সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে। শেষ পর্যন্ত জয়ের কথায় ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা এবং জাতির উদ্দেশে সেনাপ্রধানের বক্তব্যের আগে তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।