কৃষ্ণসাগরের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ আর কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না বলে জানিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) তিনি এই মন্তব্য করেন।
কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এই উপদ্বীপটি রাশিয়া ২০১৪ সালে দখল করে নেয় এবং ইউক্রেন এখনও এই ভূখণ্ডটির দাবি ছাড়েনি। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে নিজের আপত্তির বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ এই মন্তব্য করেন। এর আগে গত ডিসেম্বরে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীকে সহায়তায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশনে যোগদানের বিষয়ে একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ক্রোয়েশিয়ান আইনপ্রণেতারা।
এই ঘটনাটি প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ ও প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ প্লেনকোভিচের মধ্যে গভীর বিভাজন তুলে ধরেছিল।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনে পশ্চিমা নীতির সোচ্চার সমালোচক প্রেসিডেন্ট মিলানোভিচ বলেছেন, তিনি চান না ইউক্রেনে ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিণতির মুখোমুখি হোক তার দেশ।
ক্রোয়েশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর পেত্রিঞ্জায় সামরিক ব্যারাক পরিদর্শনকালে কিয়েভের জন্য পশ্চিমা সামরিক সহায়তার কথা উল্লেখ করে মিলানোভিচ সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনে পশ্চিমারা যা করছে তা গভীরভাবে অনৈতিক কারণ (যুদ্ধের) কোনও সমাধান নেই।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে জার্মান ট্যাংক ঢুকলে সেটি কেবল রাশিয়াকে চীনের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাবে। মিলানোভিচের ভাষায়, ‘এটা স্পষ্ট যে, ক্রিমিয়া আর কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না।’
এর আগে ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া। অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ মস্কোর এই দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি। এছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে রাশিয়া বলেছে, রুশ বাহিনী কৃষ্ণসাগরের এই উপদ্বীপটি দখল করার পর সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানেই দেখা গেছে, ক্রিমিয়ানরা সত্যিকার অর্থেই রাশিয়ার অংশ হতে চায়। যদিও সেই গণভোটকে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ স্বীকৃতি দেয়নি।
এদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বৈত ভূমিকা পালন করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করেছেন মিলানোভিচ। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশ দখলে নেওয়ার জন্য অজুহাত হিসাবে ‘কসোভোর সংযুক্তিকে’ ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া।
রয়টার্স বলছে, ক্রোয়েশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ দেশটির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসডিপি) সদস্য এবং দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ইউরোপের এই দেশটির আলঙ্কারিক পদ হিসেবে পরিচিত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি ইইউ-বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছেন।