আন্তর্জাতিক পরিসরে বেশ উন্নতি করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। টাইগার ক্রিকেটাররা তাদের মেধা এবং পরিশ্রম দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন সেরাদের কাতারে। গত এক দশক ধরেই ঘরের মাঠে বেশ শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে টিম টাইগার্স।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় টাইগারদের অনেকেই করেছেন রেকর্ড, গড়েছেন নতুন মাইলফলক। এসবের মাঝেই কয়েকটি আছে যা অন্যদের জন্য ছাড়িয়ে যাওয়া হতে পারে খুবই কঠিন। এমন কয়েকটি রেকর্ডের কথাই জানবো আজ।
১. অভিষেক টেস্টে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান: বাংলাদেশের ক্রিকেটে অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে দেখা হয় মোহাম্মদ আশরাফুলকে। ২০০১ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। পরের বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেন সাদা পোশাকে নিজের প্রথম ম্যাচ। সে ম্যাচে ২১২ বল খেলে ১১৪ রান করেছিলেন তিনি যা সৃষ্টি করে ইতিহাস। তখন মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন বয়সে ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন তিনি।
২. টেস্টে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি সহ ১০ উইকেট পাওয়া একমাত্র ক্রিকেটার: সাদা পোশাকের ক্রিকেটে চলতি শতাব্দীতে নানান রকমের রেকর্ড গড়েছেন অনেক ক্রিকেটারই। তবে এসবের মাঝে অনন্য হয়ে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ১৩৭ রান করেছিলেন তিনি। এরপর বল হাতেও ছিল তাঁর নজরকাড়া পারফরম্যান্স। একাই নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। একবিংশ শতাব্দীতে এমন অর্জন নেই আর কোনো ক্রিকেটারেরই।
৩. একই টেস্টে সেঞ্চুরি এবং হ্যাটট্রিক: টাইগারদের হয়ে একসময় নিয়মিতই খেলতে দেখা যেত সোহাগ গাজীকে। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল তার। এরপর ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ব্যাট হাতে ১০১ রান করেছিলেন তিনি।
এরপর বল হাতেও বেশ উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। তাঁর করা হ্যাট্রিকের কল্যাণেই সেদিন ম্যাচ ড্র করতে পেরেছিল টাইগাররা। আর ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেন সোহাগ একই টেস্টে হ্যাটট্রিক এবং সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়ে।
৪. টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেকে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: ২০১৫ সালে অভিষেকের পর থেকেই বিস্ময় বালকের ক্যাতি পেয়ে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর করা স্লোয়ার এবং কাটার বলে খেই হারিয়ে ফেলত সেরা ব্যাটাররাও।
ভারতের বিপক্ষে ২০১৫ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় তাঁর। সে ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাদা পোশাকে অভিষেক হয় তার। টেস্টে নিজের ডেব্যু ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সে ম্যাচটি ড্র হলে পরে তাঁর হাতেই উঠেছিল ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
৫. অভিষেক টেস্টে দশে নেমে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটার: ক্রিকেটে দশ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করে থাকেন বোলাররা। এমন পজিশনে ব্যাট হাতে নেমে বড় স্কোরের দেখা পাওয়া অনেকটাই বিরল। তবে এমন কাজই করে দেখিয়েছিলেন আবুল হাসান।
নিজের অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশি এ পেসার দশ নম্বরে নেমে করেছিলেন সেঞ্চুরি। ফলে একবিংশ শতাব্দীতে এই পজিশনে শতক হাঁকানো একমাত্র ক্রিকেটারও তিনিই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১২ সালে টেস্টে এমন কীর্তি গড়েছিলেন তিনি, ১২৩ বল খেলে করেছিলেন ১১৩ রান।