আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানি পশুর হাটগুলোতে চাঁদাবাজি ও জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এই তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। কোরবানি পশুর হাটে যে কেনাবেচা সেটার প্রতি বিশেষ নজরদারি রয়েছে। কারণ ইজারা পরবর্তী চাঁদাবাজি ও জাল টাকা জড়িয়ে দেওয়ার মতো একটি বিষয় থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কৃত্রিম রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে গরুকে মোটাতাজাকরণ করা হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, কোরবানির হাটে অনেকে প্রতারিত হয়। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গ্রামে যারা ঈদ করতে যান তাদের নিরাপত্তা দেওয়া ও যাত্রা পথে যাতে তারা নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন সেই ক্ষেত্রেও আমরা দায়িত্ব পালন করছি।
শপিং সেন্টারগুলোতে নজরদারি রাখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে শপিং সেন্টার বা বিভিন্ন মার্কেটে মানুষের ভিড় হয়। মার্কেট থেকে ফেরার সময় অনেকে মলম বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কাজ করছি। এছাড়াও লঞ্চ ও ফেরিঘাটে অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পরে যাতে কেউ না পাড়ে সেই বিষয়টি বাড়তি নজরদারি রাখা হয়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, কোরবানি ঈদে এক শ্রেণীর চামড়া ব্যবসায়ী প্রতারণা করে নিজেকে লাভবান করার চেষ্টা করেন। তাদের ব্যাপারেও আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। সম্মানিত নাগরীকরা যাতে সুলভ মূল্য চামড়া বিক্রি করতে পারেন সেই বিষয়য়েও নজরদারি করা হচ্ছে।
অনলাইনে গরু বেচাকেনা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেকেই এখন হাটে গিয়ে গরু কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তাই তারা ঘরে বসে অনলাইনে গরু কিনেন। বিভিন্ন পেজের মধ্যেমে যারা গরু-ছাগল বেচাকেনা করবেন; সেই পেজগুলোতে নজরদারি করা হচ্ছে। অনলাইনে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে কেউ প্রতারণার শিকার হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঈদের জামাতগুলোতে দায়িত্বা পালন করে থাকি। পূর্ববর্তী সময়েও ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলা হয়েছে। সেটা আমরা মাথায় নিয়েই নিরাপত্তা বলয় বা গোয়েন্দা নজরদারি চলমান রেখেছি।
অনলাইন শপিংয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঈদে অনলাইনে যারা শপিং করে প্রতারণা শিকার হন; তাদের পাশেও আমরা রয়েছি। প্রতারণার শিকার কারও তথ্য থাকলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিভিন্ন স্থানে কন্ট্রোল রুম থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি বাড়িতে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারী বা যেকোনো বিপদে পড়েন তা হলে অবশ্যই আমাদের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেন। তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব।
বাসা-বাড়িতে রেখে যাওয়া মালামাল ও মূল্যবান জিনিস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেউ চাইলে তাদের সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সবার সাথে আমরা যোগাযোগ রাখছি। যাতে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের বাসা-বাড়ি নিরাপদ রাখা যায়।
এবার ঈদে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই। তবে আমরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে কাজ করি।