সোমবার (১৯ মে) দুপুরে জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক কাজল রেখা (৫০)। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
কাজল রেখা চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের কুরী পাড়ার ‘বাতাসি বিল্ডিং’-এর মালিক এবং ওই এলাকার সৌদি প্রবাসী ফখরুল ইসলামের স্ত্রী। অভিযুক্ত নূর হোসেন মাসুদ ওরফে মাটি মাসুদ বেগমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।
কাজল রেখা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থে ১৬ শতাংশ জমি কিনে তিনতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করি। বিভিন্ন জনের কাছে বাসা ভাড়া দিয়ে নিয়মিত ভাড়া আদায় করছিলাম। ছোট ছেলে ঢাকায় পড়াশোনা করতে চলে যাওয়ায় বাড়িটি দেখভালের জন্য উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নূর হোসেন মাসুদকে দায়িত্ব দিই। সে আমার বড় ছেলে পারভেজের বন্ধু। ২০১০ সালে আমাদের থাকার তিন তলায় তাকে থাকতে দিই। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে মাসুদ আর ভাড়া দিচ্ছে না। ভাড়া চাইলে সে ক্ষমতার জোর দেখায়। আমি অসহায় হয়ে পড়ি।
তিনি আরও বলেন, মাসুদ আমার অনুমতি ছাড়া ভাড়াটিয়াদের বের করে দিয়ে নিজের পছন্দ মতো লোকদের বাসায় উঠায়। বিগত সরকারের সময় বেগমগঞ্জ-৩ আসনের পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার ক্ষমতা বাড়ে। এরপর আমার কথাকে তোয়াক্কা না করে মৌখিকভাবে বাড়িটি বিক্রি করে দেয়।
কাজল রেখা জানান, গত ৫ আগস্ট মাসুদ পালিয়ে গেলে আমি আমার বাড়িটি পুনরায় দখলে নিই। এরপর দখলদাররা জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমনের শরণাপন্ন হয়। তিনি তার অনুসারী সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য সবুজ, মামুন, সাগর, সোহেল, কুরী ও সুজনকে দিয়ে গত ১২ মার্চ বাড়ির তালা ভেঙে পুনরায় প্রবেশ করে জোরপূর্বক দখল করে নেয় এবং আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়। বিষয়টি সুমনকে জানালে সে বলে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমনের এই কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন আমার বাড়ির মালিকানা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নূর হোসেন মাসুদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে অপর অভিযুক্ত জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন ঢাকা পোস্টকে বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সংবাদ সম্মেলনে মর্মাহত। ওই নারীকে আমি চিনিও না, কখনো দেখিনি, এমনকি কখনো ফোনেও কথা হয়নি। কেউ যদি আমার নাম ব্যবহার করে অন্যায় করে থাকে, তার দায়ভার আমি নিতে পারি না। তবে যদি আমার কোনো সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, আমি সকল শাস্তি মাথা পেতে নেব।