কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কালিকাতলা গ্রামে নারী ঘটিত কলহের জেরে শহিদুল ইসলাম (২১) নামের এক যুবককে গলা কেটে হত্যার দায়ে একজনকে আমৃত্যু এবং দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম জনাকীর্ন আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন বলে নিশ্চিত করেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ্যাড: অনুপ কুমার নন্দী।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন উপজেলার কালিকাতলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত: মুনসুর মোল্লার ছেলে সালাম মোলা(৪৭)। এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলেন- একই এলাকার বাসিন্দা হারুনর রশিদের ছেলে রেজাউল জোয়ার্দার কালু(৪২) এবং আমির হামজার ছেলে সাইফুল ইসলাম সাম(৩৪)। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৩ মে রাতে শহিদুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৫দিন পর ২৮ মে সকালে পাশর্^বর্তা কালিতলা এলাকয় একটি কচুরীপানা ভর্তি ডোবা থেকে তার গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় নিহতের পিতা উপজেলার কালিকাতলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত: দিয়ানত আলীর ছেলে মুনছের আলী বাদি হয়ে ৫জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কুমারখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে এজাহার ভুক্ত আসামী সালাম মোল্লাসহ এজাহার বহির্ভুত একই এলাকার বাসিন্দা হারুনর রশিদের ছেলে রেজাউল জোয়ার্দার কালু(৪২) এবং আমির হামজার ছেলে সাইফুল ইসলাম সাম(৩৪) আসামীগনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১৬ জুন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিয়ার রহমান।
কুষ্টিয়া আদালতের কৌঁসুলী এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, নারী ঘটিত কলহের জেরে যুবক শহীদুলকে গলাকেটে হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন শেষে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানীতে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় তাদের মধ্যে সালাম মোল্লা নামে একজনের আমৃত্যু এবং এজাহার বহির্ভুত একই এলাকার বাসিন্দা হারুনর রশিদের ছেলে রেজাউল জোয়ার্দার কালু(৪২) এবং আমির হামজার ছেলে সাইফুল ইসলাম সাম(৩৪) আসামীদ্বয়ের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া এজাহার ভুক্ত আসামী মিলন মোল্লা, নজরুল ইসলাম, মোমিন ও মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এসময় আদালতে উপস্থি নিহত শহিদুল ইসলামের পিতা ও মামলার বাদি মুনছের আলী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমার ছেলে শহিদুল ইসলামকে নির্মম নির্যাতন করে গলা কেটে হত্যা করেছিলো আসামিরা। ১১ বছর ধরে এই বিচারের আশায় বসে ছিলাম। আজ যে রায় হয়েছে তাতে আমি খুশি। তবে তাদের ফাঁসি হলে আমরা আরও বেশি খুশি হতাম।