বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কের জেরে কুমিল্লায় দুই শিশুকে হত্যার দায়ে ইয়াসমিন আক্তারকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরেক নারী মাজেদা বেগমকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খানম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই নারীর নাম ইয়াসমিন আক্তার। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো. বাবুল হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন (২৮) এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত নারী একই গ্রামের সেলিম মিয়ার স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪৩)। তিনি ইয়াসমিনের চাচি শাশুড়ি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান জানান, রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই নারী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রায় শুনে এজলাসেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন ওই দুই নারী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নুরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল লাজৈর গ্রামের প্রবাসী মো. বাবুল হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনা দেখে ফেলায় একই বাড়ির মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে আরাফাতকে (৬) ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে হত্যা করেন তিনি। খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় কিছুক্ষণ পর ওই বাড়ির শাহ আলমের ছেলে জসিমকেও (৭) ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ খালে ডুবিয়ে দেন।
স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ইয়াসমিনকে সহযোগিতা করেন মামলার আরেক নারী তার চাচি শাশুড়ি মাজেদা বেগম। ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত বছর র্যাব-১১ তাকে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে আটক করে।
এ ঘটনায় ওই বছরের ২১ এপ্রিল মুরাদনগর থানায় ইয়াসমিনকে ১ নম্বর এবং মাজেদা বেগমকে ২ নম্বর ও অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জনকে আসামি করে নিহত আরাফাতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী তাইফুর রহমান এবং শাহানা সুলতানা সোমা বলেন, আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।