বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। এক পর্যায়ে তারা কলেজের ৬ শিক্ষককে কক্ষে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর শুরু করে বিক্ষোভ। এসময় তাদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে কলেজ প্রাঙ্গণ।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন কুমিল্লা নার্সিং কলেজের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দেন কলেজেরই একজন শিক্ষক। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পরদিন কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদে ৬ শিক্ষকসহ কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন। দুপুর ২টায় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেয়। তখন কলেজে প্রবেশ করে অভিযুক্ত শিক্ষক মোসা. মিরণ নাহার বেগমের বক্তব্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময় অন্যান্য শিক্ষকরাও কলেজে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মিরণ নাহার বেগম জানান, গত ২ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের ড্রেস কোড মেনে শ্রেণিকক্ষে আসার জন্য বলে আসছি। অধিকাংশ শিক্ষার্থী ড্রেসকোড মেনে শ্রেণিকক্ষে আসলেও কয়েকজন শিক্ষার্থী ড্রেসকোড মানছেন না। তারা তাদের ইচ্ছেমতো ড্রেস পরে শ্রেণিকক্ষে আসছেন। হিজাব পরতে কাউকে নিষেধ করিনি বা কখনো করিনাই। কেবল শালিনতার সঙ্গে ড্রেসকোড মেনে হিজাব পরার জন্য ছাত্রীদের উপদেশ দিয়ে আসছি।
হিজাব কাটার বিষয়ে তিনি জানান, অনেক বলার পর যারা ড্রেসকোড না মেনে হিজাব পড়েছেন তাদের হিজাবের অতিরিক্ত অংশ কেটে দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তিনি অনুতপ্ত। তিনি আরও জানান, আমি যার হিজাব কেটেছি তিনি একজন হিন্দু মেয়ে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে হিজাব পরার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কলেজে তালা দিয়েছেন। তারা আন্দোলনের সময় শিক্ষকদের তালা দিয়ে আন্দোলন করেছেন। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হিজাব কাটা অন্যায়। মুসলিম প্রধান দেশে এ ঘটনা জঘন্যতম অন্যায়। কেন মেডাম হিজাব কেটেছে তার সঠিক বিচার চান।
এ বিষয়ে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কলেজের অধ্যক্ষ আকবরি খানম জানান, তিনি ঢাকায় ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে কলেজে এসে বিস্তারিত জানা চেষ্টা করছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছ থেকে লিখিত আকারে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও লিখিত অভিযোগ চেয়েছেন। উভয়পক্ষের তথ্যের আলোকে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।