কুমিল্লায় উদ্বোধনের আগেই নবনির্মিত সেতুর বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার মেঘনা উপজেলার লুটের চর ইউনিয়নের চরকাঠালিয়া গ্রাম হতে চেঙ্গাকান্দি খেয়াঘাট যাওয়ার রাস্তায় একটি খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঐ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে সেখানে কার্যাদেশ ও অনুমোদিত ডিজাইন অনুযায়ী নতুন করে সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেন। কিন্তু ঐ নির্দেশের এক মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু হয়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় ও তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে জেলার মেঘনা উপজেলার চরকাঠালিয়া গ্রাম হতে চেঙ্গাকান্দি খেয়াঘাট যাওয়ার রাস্তায় খালের ওপর ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৪ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও উদ্বোধনের আগেই ঐ সেতুর বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে গঠিত কমিটির তদন্ত কর্মকর্তা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর-ঢাকার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম গত ৩১ মে সরেজমিন সেতুটি পরিদর্শন করে গত ৬ জুন অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ঐ প্রতিবেদনে সেতুটি নির্মাণকালে মনিটরিং না করা, সেতুর বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি, ডিজাইন অনুযায়ী ঢালাই ও অন্যান্য কাজ না করা, পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া ব্যবহার, সঠিক অনুপাতে সিমেন্ট ব্যবহার না করাসহ নিম্নমানের কাজ করার নানা চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে সেতুটি ভেঙে নতুনভাবে সেখানে অনুমোদিত ডিজাইন অনুযায়ী সেতু নির্মাণের সুপারিশ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রবীর কুমার রায় বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন ও নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেতুটি ভেঙে সেখানে অনুমোদিত ডিজাইন অনুসারে নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে গতকাল ১১ আগস্ট পর্যন্ত এক মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মনিরুল হক জানান, সেতুটি নির্মাণে চলতি বিল হিসেবে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে, বাকি টাকা দেওয়া হয়নি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর তদন্ত প্রতিবেদন এবং মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চিঠি ও নির্দেশনা অনুসারে সেতুটি ভেঙে ফেলতে হবে। সেখানে ডিজাইন অনুযায়ী সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করা না হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।