শনিবার (১১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে ডিসি অফিস সংলগ্ন থেকে আন্দোলনকারীদের মিছিল শহরের কালীবাড়ি মোড় হয়ে গৌরাঙ্গ বাজার প্রদক্ষিণ করে পুরান থানা এলাকার স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে কিশোরগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহানের পরিচালনায় বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জের প্রধান সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন, শিক্ষার্থী মুনতাসীর, নাদিম, মাসুদসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, কিশোরগঞ্জে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তারুণ্য উৎসব, শীতবস্ত্র বিতরণ, শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটুক্তি, জয় বাংলা স্লোগানসহ নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কিত কাজ করছে ডিসি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। তাই জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে অপসারণ করতে হবে।
বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জের প্রধান সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান পতিত স্বৈরাচারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান যারা মামলার আসামি তাদের নিয়ে মিটিং করেন। এটি আমাদের শহীদ ভাইদের সঙ্গে বেইমানি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা শুনতে পেরেছি কিশোরগঞ্জে ২০ হাজার কম্বল এসেছে যা সাধারণ ছিন্নমূল মানুষকে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের গণহত্যাকারী ভোটবিহীন চেয়ারম্যান আওয়ামীদের কাছে তুলে দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের স্বৈরাচারের দোসরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই অবিলম্বে ডিসি, এসপি, ইউএনওকে পদত্যাগ করতে হবে।
আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, কেন্দ্রীয় তথাকথিত কিছু সমন্বয়ক রয়েছেন তারা বিভিন্ন জেলায় মাই ম্যান প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যস্ত। যদি এমন হয় তাদের বিরুদ্ধেও কিশোরগঞ্জ থেকে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
এ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে গণহত্যার সহযোগী প্রশাসনের আরও কর্মকর্তা স্বপদে বহাল রয়েছে। শিগগিরই আমাদের দাবি আদায় না হলে ছাত্রসমাজ কঠোর কর্মসূচিতে যাবে।
এ সময় ‘দফা এক দাবি এক, ডিসির পদত্যাগ’, ‘দিয়েছিতো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ‘আওয়ামী লীগের দোসর ফৌজিয়া খানের পদত্যাগ’-এমন নানা স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একজন মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে শহীদ আবু সাঈদকে কটাক্ষ করা হয়। সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বিষয়টি প্রতিহত না করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সে-সময় বিতর্কিত বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। স্থানীয় শিক্ষার্থীরা ওই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।