চমক আর দেখানো হলো না আফগানিস্তানের। চেন্নাইয়ের পিচ বোলিংবান্ধব সে কথা অনেক আগে থেকেই চালু আছে। তবে সেই পিচ যে এতটা ভয়ানক হবে, তা হয়ত কেউই আশা করেননি। স্পিনবান্ধব উইকেট বলা হলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে আগুনই ঝরিয়েছেন কিউই পেসাররা। লোকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্টদের দাপুটে বোলিং দাঁড়াতেই দেয়নি আফগানদের। আর ১৪৯ রানের বড় জয়ের সুবাদে বিশ্বকাপে টানা চার ম্যাচ জিতে এখন সবার উপরেই থাকছে নিউজিল্যান্ড।
চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে আফগানদের সামনে টার্গেট ছিল ২৮৯ রান। বোলিং পিচে রান তোলা বেশ কষ্টের। তাই হয়েছে। পাওারপ্লের প্রথম দশ ওভারে রান উঠেছে ওভারপ্রতি তিন করে। তবে সাবধানী শুরু করেও রক্ষা হয়নি তাদের। ব্যাটিং অর্ডারের দুই ভরসা রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান দুজনেই ফিরে গিয়েছেন পাওয়ারপ্লের আগে। হেনরির শিকার গুরবাজ আর জাদরানকে ফিরিয়েছেন বোল্ট।
অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিও বড় করতে পারেননি ইনিংস। দলীয় ৪৩ রানে ফিরে যান তিনি। রহমত শাহ এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই চেষ্টা করেছিলেন ইনিংস মেরামতের। দুজন মিলে করেছেন ৫৪ রানের জুটি। তাদের বিচ্ছিন্ন করেন বোল্ট। ৯৭ রানে ফিরে যান ওমরজাই।
এতেই যেন শেষ হয়ে যায় আফগানদের শেষ প্রতিরোধ। বাকি ব্যাটাররা ছিলেন কেবল আসা যাওয়ার মিছিলে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন রহমত শাহ। আফগান ইনিংসের শেষ ৫ জনের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ইনিংসটাও গুটিয়ে যায় ১৩৯ রানে।
এর আগে টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। বোলিং পিচের সুবিধা নিয়ে কিউইদের আটকে ফেলাই ছিল তাদের লক্ষ্য। তবে সেই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি আফগানরা। দারুণ বল করলেও বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হয়েছে তাদের। নির্ধারিত ৫০ ওভারে তাদের রান ২৮৮।
শুরুটা নিউজিল্যান্ড করেছিল ধীরলয়ে। ষষ্ঠ ওভারে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডেভন কনওয়েকে সাজঘরে ফেরত পাঠান মুজিব উর রহমান। কিউইদের রান উঠছিল তখন ওভারপ্রতি ৫ করে। এরপর অবশ্য লম্বা সময় ক্রিজে রাজত্ব করেছিলেন উইল ইয়াং এবং রাচিন রবীন্দ্র। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৭৯ রান। এই জুটি আরও আগেই ভাঙ্গতে পারতো, যদি রাচিনের ক্যাচটা ঠিকভাবে লুফে নিতে পারতেন হাশমতউল্লাহ শহিদি।
এরপর আচমকাই ম্যাচের দৃশ্যপট নিজেদের করে নেন আফগান বোলাররা। আজমতউল্লাহ ওমরজাই এর জোড়া আঘাতে ফিরে যান দুই সেট ব্যাটার। আর ড্যারেল মিচেলকে ফেরান রশিদ খান। ১ রান তুলতেই নিউজিল্যান্ডরা হারায় তিন উইকেট। ১০৯ রানে ১ উইকেট থেকে ১১০ রানেই হয়ে যায় ৩ উইকেট।
এখান থেকেই প্রতিরোধের শুরু করেন টম ল্যাথাম এবং গ্লেন ফিলিপস। সাবধানী ইনিংসে দলের ইনিংস মেরামতে মনোযোগ দেন দুজনেই। অবশ্য তাতে আফগান ফিল্ডারদের কৃতিত্বও আছে। মুজিব-উর রহমান এবং হাশমতউল্লাহ শহিদি দুজনেই ক্যাচ ছেড়েছেন।
শেষদিকে ব্যাটে ঝড় তুলতে চেয়েও পারেননি ল্যাথাম এবং ফিলিপস। নাভিন উল হকের ওভারে মারতে গিয়ে দুজনেই আউট হয়েছেন। তবে তাতে রানতোলায় ভাটা পড়েনি। মার্ক চ্যাপম্যানের ক্যামিওতে ভর করে ঠিকই ২৮৮ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। আফগানিস্তানের পক্ষে দুইটি করে উইকেট নেন ওমরজাই এবং নাভিন।