গার্মেন্টস ও সব শিল্প কারখানা খোলা রেখে কি কঠিন লকডাউন সম্ভব কিনা এমন প্রশ্ন করে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, কারখানার শ্রমিকরা এই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলেও তাদের জীবন ও স্বাস্থ্যনিরাপত্তা সবসময় উপেক্ষা করা হয়েছে। এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে দেশের সব নাগরিকের প্রতি সমান আচরণ করতে হবে।
লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখা এবং শ্রমিকদের বেতন-বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ করার মধ্য দিয়ে তাদের ঘরে থাকা এবং স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সোমবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব দাবি জানান। তারা বলেন, সরকারের উদাসীনতা, অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতায় পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। করোনাকালে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া এবং গণপরিবহন ও মার্কেটগুলো একবার বন্ধ করে আবার খুলে দেওয়া, প্রণোদনার নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ায় পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার লকডাউনের নামে যদি গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা খোলা রাখা হয় তাহলে তা হবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পরিহাসের নামান্তর মাত্র।
নেতৃদ্বয় বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। রমজানের শুরুতেই লকডাউনের ঘোষণা আসছে। এমন পরিস্থিতিতে নিম্নআয়ের মানুষ সমস্যায় পড়বে সবচাইতে বেশি। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কর্মহীন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা উচিত সরকারের।
তারা আরো বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। অথচ বাড়েনি জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার আয়োজন। ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেড ৩২২টি ও ঢাকার বাইরে সারাদেশে ১১০টি। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে। বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেড মানে একটা ব্যবসা। আইসিইউ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স ও সাপোর্টিং স্টাফদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি।
নেতৃদ্বয় বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। সরকারি হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডে বেড ও আইসিইউ বেডের সংখ্যা ও জনবল বৃদ্ধি এবং হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার, ট্রলি, হুইল চেয়ার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।