কারও ভয়ে ভীত না হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেকে সমুন্নত রেখে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টারদের অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্রাইম রিপোর্টাররা একে অপরের পরিপূরক। কারণ ক্রাইম রিপোর্টাররা যেভাবে ঘটনার গভীরে যান, তদন্ত করেন তা সত্যিই অভাবনীয়। আমি অনেক রিপোর্ট দেখেছি যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারেনি তা সাংবাদিকরা পেরেছেন।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) ৪ দশক উদযাপন উপলক্ষ্যে রোববার (২৩ জুলাই) ডিআরইউ নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, জলদস্যুদের তাণ্ডব ও সুন্দরবন রক্ষার ক্ষেত্রে র্যাবের অভিযানের সময় দেখেছি একজন সাংবাদিকের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিমই গহীন বন থেকে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণে সহযোগিতা করেছেন। এটা বড় একটা উদাহরণ মাত্র।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ, র্যাবসহ যারা আইনশৃঙ্খলায় কাজ করেন, তাদের কাজটা সহজ হয়ে যায় ক্রাইম রিপোর্টারদের রিপোর্টিংয়ের কারণে। কারণ ক্রাইম রিপোর্টাররা অনেক গভীরে যান, খবরের অন্তরালের খবর বের করে নিয়ে আসেন। তাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজটা সহজই হয়।
তিনি বলেন, অনেক সময় অনেক ঝুঁকি নেন ক্রাইম রিপোর্টাররা। অনেক বৈরিতা উপেক্ষা করে কাজ করেন তারা। কারণ তারা দেশকে ভালবাসেন, জনগণকে ভালবাসেন। প্রধানমন্ত্রী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ও গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তেমনিভাবে সাংবাদিকদের লেখনীও গুরুত্বপূর্ণ। কারও ভয়ে ভীত না হয় সঠিক খবরটা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদটা সাংবাদিকদের কাছে আমাদের কাম্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) পদে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বজায় রেখে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনবদ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে ক্র্যাব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন অপরাধ তথ্য সংগ্রহ করছে। ক্রাইম রিপোর্টাররা শুরু থেকে র্যাবকে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।
অনেকক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ক্রাইম রিপোর্টারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। তবে এই ক্ষেত্রে র্যাব ব্যতিক্রম। আমাদের যে সেতুবন্ধন সেটি অব্যাহত থাকবে।
হাইওয়ে পুলিশপ্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শাহাবুদ্দিন খান বলেন, আমরা যেসব বিষয়ে কাজ করি, সেগুলো কাজ করে ক্রাইম রিপোর্টাররা। ক্রাইম রিপোর্টাররা পুলিশের বন্ধু। কারণ পুলিশ ও সাংবাদিক জনগণের জন্য কাজ করি। পুলিশের পেশাগত দক্ষতা নিষ্ঠা, দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার কোনো বিকল্প নেই, তেমনি সাংবাদিকের বস্তুনিষ্ঠ লেখনীর বিকল্প নেই।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সেক্রেটারি মাইনুল হাসান সোহেল ও পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।