বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি ‘এখনই’ মানা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপরও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ চান তারা। এমতাবস্থায় ক্লাসে ফেরার নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন অব্যাহত রাখা বেশ কয়েকজন শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে মন্ত্রণালয়, অনুপস্থিতির তালিকা ধরে পাঠানো হয়েছে শোকজ নোটিশ। তবে আন্দোলনে অনড় শিক্ষকরা।
এরই ধারাবাহিকতায় দাবি আদায়ে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। জাতীয় সংগীত পরিবেশন ছাড়াও দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে আজ থেকে নতুন এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
গত ১১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষকেরা তাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ বা সরকারি করার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও প্রতিদিন এখানেই আন্দোলন করছেন তারা। টানা অবস্থানের কারণে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। আন্দোলনের মাঝে শিক্ষকরা স্কুলে তালা দেওয়ার কর্মসূচিও পালন করেছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মানার ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
শুরুতে মাউশির মহাপরিচালক আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কর্মসূচি থেকে সরেননি শিক্ষকরা। পরে গত ১৯ জুলাই খোদ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাদের সঙ্গে বসেন তারা। পরে মন্ত্রী শিক্ষকদের সাফ জানিয়ে দেন- নির্বাচনের আগে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে একটি গবেষণা কমিটি করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তা কানে তোলেননি শিক্ষকরা। অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলন।
সবশেষ গত ২২ জুলাই রাতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে। বৈঠকে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। এই আশ্বাস পেয়েই এখন প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাবেন- এই আশায় বুক বেঁধে আছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
তবে কোনো অবস্থাতেই শিক্ষকদের বাগে আনতে না পেরে ক্রমেই হার্ডলাইনে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি। গত ২৩ জুলাই মাউশি অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইংয়ের বরাত দিয়ে মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হক হেনরী শোকজের চিঠি দিয়েছেন অনুমোদন ছাড়াই স্কুলে অনুপস্থিত থাকা ৩৪ জন শিক্ষককে।
শোকজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষে আছে রংপুর অঞ্চল। এই অঞ্চলের ১০ জন শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য বিভাগে কোথাও পাঁচজন, কোথাও চারজন, আবার কোথাও তিন বা দুই-একজন করে শিক্ষক রয়েছেন তালিকায়।