রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দেন এরশাদপত্নী। এ সময় দলের বহিষ্কার, প্রত্যাহার হওয়া নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।
রওশন এরশাদ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য নেতৃত্ব ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। জাতীয় পার্টিতে এখন ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও কো- চেয়ারম্যান হওয়ায় আমি বেগম রওশন এরশাদ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
এরশাদপত্নী বলেন, নেতাকর্মীদের অনুরোধে আমি পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। আর পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কাজী মানুনুর রশীদকে মহাসচিব ঘোষণা করছি।
তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বক্তব্য ও বিবৃতি এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের ভূমিকা পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন প্রদান করে ২৬টি আসনে সমঝোতা করেও জনগণরে সামনে অস্বীকার করে দেশবাসী এবং পার্টির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
রওশন এরশাদ বলেন, পার্টির নেতাকর্মীদের অনুরোধে এবং পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতাবলে আমি পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি প্রদান করলাম। চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ব্যতীত পার্টির অন্যান্য পদ পদবি স্ব স্ব অবস্থায় বহাল থাকবে।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জিএম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয় রওশন এরশাদের। এ কারণে তিনি নির্বাচনে অংশও নেননি। গতকাল হঠাৎ করেই তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আজ রোববার বৈঠক করার কথা জানান।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়ে এরশাদের হাতেগড়া দল জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০ শতাধিক নেতাকর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।
তবে দলে ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে সেই দলকে তারা স্বাগত জানাবে বলে জানান মুজিবুল হক চুন্নু। গতকাল শনিবার চুন্নু বলেন, ‘নতুন দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কী আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তার নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’