গোটা বিশ্বের মনোযোগ এখন কাতারের দোহায়। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগে দোহায় আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হবে আরেকটি বিশ্বকাপ। অক্টোবরে ২৬ দেশ নিয়ে দোহায় অনুষ্ঠিত হবে পথ শিশুদের বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নারী পথ শিশুরা অংশগ্রহণ করবেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন দোহাগামী পথ শিশুদের নিয়ে এক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
কারও বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, আবার কারও বাবা-মা নেই পথেই তারা বেড়ে উঠেছেন। পথেই তাদের জীবন। এমন শিশুদের নিয়ে কাজ করে লিডো। এই সংস্থাটি পথের জীবন থেকে শিশুদের সামাজিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ নানা সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করে লিডো। লিডোর মাধ্যমে পথশিশুরা নতুন এক জীবনের স্বাদ পেয়েছেন।
ফুটবল বিশ্বকাপের আগে পথ শিশুরা ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলেছেন। সেই বিশ্বকাপ খেলে আসা নিজাম বলেন, ‘আমাদের জীবন পথে পথে কেটেছে। আমাদের কেউ দেখার ছিল না। এই লিডোর মাধ্যমে আমরা এখন সামাজিক একটা মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করেছি। আগে আমি লিডো স্কুলের স্টুডেন্ট ছিলাম এখন সেখানে পড়াই।’
সমাজ ও রাষ্ট্রে পথশিশুরা অবহেলিত। অনেক কষ্টে তাদের বাঁচতে হয়। নিজেদের জীবনযাত্রার বিষয়গুলো কয়েক মিনিটের মধ্যে মঞ্চ নাটকে নিজেরাই ফুটিয়ে তুলেছেন আজকের অনুষ্ঠানে। সেই মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়ে তারা রাষ্ট্রের কাছে অধিকার ও মর্যাদার দাবি জানিয়েছেন। পথ শিশুদের অধিকার নিয়ে তিন দশক যাবত কাজ করছেন ফরহাদ হোসেন। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত লিডোর সঙ্গেও তিনি রয়েছেন। পথ শিশুদের সম্পর্কে ফরহাদ বলেন, ‘পথ শিশুদের প্রতি মানুষের ধারণা বদলাতে শুরু করেছে। পথ শিশুরা নিজেরাও এখন সামাজিক অধিকারের জন্য সচেষ্ট। আমরা সংগঠনের পথ চেষ্টা করি তাদের সাধারণ জীবনের স্বাদ দেয়ার। আমাদের সাথে বিভিণ্ন সংগঠন ও সংস্থাও সহায়তা করে তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই।’
পথ শিশুদের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বিমান টিকিটের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। এমন একটি কাজের সঙ্গে থাকতে পেরে বেশ তৃপ্ত ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম, ‘আমরা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করি। যখনই এ রকম একটি উদ্যোগের কথা শুনেছি, তখনই আমরা এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা বলেছি।’ ইউএস বাংলার পাশাপাশি এই দলের পৃষ্ঠপোষকতা করছে কেএফসি সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
পথ শিশু নারী দলকে উৎসাহ দিতে ব্রিটিশ হাইকমিশনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের দুই ফুটবলার। পথ শিশু নারী দলের প্রশিক্ষক নাজমাও পথশিশু। তাকে এএফসির সি লাইসেন্স কোচিংয়ে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। নাজমা তার দল নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই দলটি কয়েক মাস ধরে অনুশীলন করছে। আশা করি কাতারে আমরা ম্যাচ জিততে পারব।’ পথ শিশুদের বিশ্বকাপটি সেভেন এ সাইড।
ব্রিটিশ হাই কমিশনে অনুষ্ঠিত আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, লিডো, বিভিন্ন পৃষ্ঠপোষক ও সামাজিক সংস্থাগুলো।