নির্বাচনে কর্মী মারা গেলে তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম। যা নিয়ে দেশ জুড়েই তৈরি হয় বিতর্ক। তবে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আসন্ন ৪র্থ ধাপের নির্বাচনে বাসাইল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন তিনিই!
মঙ্গলবার দুপুরে ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে বাসাইলের সাইফুল ইসলামসহ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও লৌহজং-এর ২৩টি ইউনিয়নে মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়।
এই বিষয়ে মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আমার কর্মকাণ্ড দল মূল্যায়ন করেছে, তাই মনোনয়ন দিয়েছে। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, কোনো মারামারি সহিংসতা চাই না। কর্মী মারা গেলে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা আমি দিয়েছিলাম। কারণ, ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে বাসাইলের একটি কেন্দ্রে তিনজন লোককে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছিল। ঐ লোকগো কেউ পাশে দাঁড়ায় নাই। আমি ঐ কথাটারে একটা উদাহরণ হিসেবে জনগণরে বলছি, আপনারা নির্বাচন আইলে ভয় পাইয়েন না।
তিনি আরো বলেন, অনেকে বলছে কর্মীদের উসকে দিচ্ছি আসলে তা না, আমি কর্মীদের ডেকে শান্তিপূর্ণ থাকতে বলো। এর আগে এই চেয়ারম্যানপ্রার্থী এক উঠান-বৈঠকে বলেন, এই নির্বাচন পারপাসে একটা লোক মারা যাইতে পারে। আমার কর্মী যারা তাদের একটা লিস্ট আছে। এই কর্মীদের ভেতরে যদি কেউ মারা যান আমার নির্বাচন করতে গিয়ে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা তার পরিবারকে দেওয়া হবে। আর যদি খুনাখুনি-বাইড়াবাইড়ি করে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তাহলে আমি তার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবো। এমনকি তার সংসারের খরচও আমি চালাবো। আমি মাইট্টা ঢোরা সাপ। চুপ করে শুয়ে থাকি, আর যখন কামড় মারি তখন মাংসসহ ছিঁড়ে ফেলি।
ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া ঐ বক্তব্যের ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানান, নির্বাচন সামনে রেখে ইউপি চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্য ইউপি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। প্রসঙ্গত আসন্ন ২৩ ডিসেম্বর ৪র্থ ধাপে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।