রাজধানীতে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে আজ মঙ্গলবারের ঘোষিত সমাবেশ স্থগিত করেছে দলটি। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের নির্দেশনা আমাদের বিস্মিত করেছে। তিনি বলেছেন যে অ্যান্টিন্যাশনাল প্রগ্রাম। এটা কেন বলেছেন, কিভাবে বলেছেন, সেটার একটা ব্যাখ্যা আমরা জানতে চাই। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন বা পালন করা কি অ্যান্টিন্যাশনাল প্রগ্রাম? সরকারি প্রগ্রামের সঙ্গে আমাদের প্রগ্রামের কনফ্রনটেশন নেই। তারা তাদেরটা করবে, আমরা আমাদের প্রগ্রাম করব। এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনে যেন বাধা সৃষ্টি করা না হয় সেই অনুরোধ জানাচ্ছি।’
১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহমানরা আসবেন। আমরা যথাসম্ভব তাতে সহযোগিতা করব। কারণ এটা জাতির সম্মানের প্রশ্ন। হঠাৎ করে ডিএমপি থেকে এ ধরনের নির্দেশনা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করবে।’মির্জা ফখরুল বলেন, সমাবেশ অনুষ্ঠানে পুলিশি বাধা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিগত নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের আকস্মিক অসুস্থতার কারণে আজ মঙ্গলবারের ঘোষিত সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটি আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কর্মসূচি তুলে ধরেন কমিটির সদস্যসচিব আবদুল হাই শিকদার। সে অনুযায়ী আজ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত উপজেলা ও থানা পর্যায়ে, ১ জুলাই থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ২০২২ সালের ২৬ মার্চ জাতীয়ভাবে সমাপনী কর্মসূচি পালন করা হবে। এসব আয়োজনে থাকছে—শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া আবৃত্তি, শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরছি। আর সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ নানাভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।’ তিনি বলেন, তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেউ লিখতে পারবে না। স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আওয়ামী লীগ আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যায়। স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্র, সেই গণতন্ত্রকে কারা হত্যা করেছে? আজকের ক্ষমতাসীনরাই পঁচাত্তর সালে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। ’কমিটির সদস্যসচিব আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য মজিবর রহমান সরোয়ার, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, ফরিদা ইয়াসমীন, রিয়াজ উদ্দিন নসু প্রমুখ।