ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি ও হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বুধবার রাত ৮টায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম বলেন, ভারতের সেক্যুলার সংবিধান অনুযায়ী ধর্মীয় বিধান পালন ও পোশাক পছন্দের বিষয়টি একজন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে ও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কর্ণাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের মতো সংবিধান বিরোধী নির্লজ্জ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জেরে ভারতে মুসলিম বিদ্বেষের ঘটনা ঘটেছে। কোথাও বাসে পাথরবৃষ্টি, কোথাও পুলিশের লাঠিচার্জের মতো ঘটনা ঘটেছে।
কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ার সম্ভাবনা আছে। তাই সরকারের উচিৎ এই ইস্যুতে কূটনীতিক তৎপরতা জোরদার করে দেশের সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম হুসাইন মৃধা, প্রশিক্ষণ সম্পাদক নূরুল বশর আজিজী, ঢাবি সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাতসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতৃবৃন্দ।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজেহিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছেন মুসলিম ছাত্রীরা।অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে। সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটকের একটি কলেজে হিজাব পরার কারণে কয়েকজন ছাত্রীকে কলেজ গেটে আটকে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
এতে কর্ণাটকের কুন্দাপুর উপকূল এলাকার উদুপুর জেলায় অধ্যক্ষের কাছে কলেজছাত্রীদের অনুনয় করতে দেখা যায়। তারা অধ্যক্ষকে হিজাব পরে ক্লাসে অংশ নেওয়ার অনুমতির জন্য আহ্বান জানান। এই ঘটনার এক মাস আগে উদুপুরের পিইউ গার্লস কলেজে প্রথম হিজাব পরা নিয়ে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। একজন ছাত্র হিজাব, হেডস্কার্ফ পরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
কর্ণাটকের রাজ্য সরকার জানিয়েছে, রাজ্যের শিক্ষানীতি অনুযায়ী সকল শিক্ষার্থীকে (ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল কর্তৃক নির্ধারিত) একই পোশাক পরে শ্রেণিকক্ষে আসতে হবে। কারণ তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করবে ছাত্র-ছাত্রীরা কেমন পোশাক পরবে। এমন পরিস্থিতিতে ক্লাসে ছাত্রীরা হিজাব পরতে পারবে কিনা, তার সমাধানে কর্ণাটক হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন কর্ণাটক সরকারি কলেজের পাঁচ ছাত্রী। কিন্তু হাইকোর্টও এ ব্যাপারে কোনো সমাধানে আসতে পারেননি। বিষয়টি সমাধানের ভার প্রধান বিচারপতির হাতেই ছেড়ে দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।