ঈদ-পরবর্তী বিধিনিষেধের তৃতীয় দিন গতকাল রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের চলাচল। পাশাপাশি বিভিন্ন চেকপোস্টে ছিল তল্লাশিও। তবে চেকপোস্টে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানীর শেওড়াপাড়া, খিলগাঁও, তালতলা, আগারগাঁও, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ টিকাটুলি, কাকরাইল, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অন্যদিনের তুলনায় এদিন ব্যক্তিগত মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও রিকশার চলাচল বেড়েছে।
অনেকেই প্রয়োজনীয় কাজ করতে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন। এসব এলাকার প্রধান সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেকপোস্ট বসিয়ে প্রতিটি গাড়ির ড্রাইভার কিংবা ভেতরে থাকা যাত্রীকে বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। যে যে সন্তোষজনক বা উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা করতে পেরেছেন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর যারা দিতে পারছিলেন না তাদের যেখান থেকে এসেছেন সেখানে ফেরত কিংবা অবস্থা বিবেচনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অন্যদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরে লোকজনের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতে লোকজন বেশি বের হচ্ছে। তারা অকারণে ঘোরাঘুরি করছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, লকডাউনের অন্যদিনগুলোয় সকাল থেকে বৃষ্টি এবং সাপ্তাহিক ছুটি, পাশাপাশি ঈদের ছুটিতে মানুষ বাড়ি যাওয়ায় রাস্তায় যানবাহন কিংবা মানুষের চলাচল কম ছিল। তবে তৃতীয় দিন বৃষ্টি না থাকায় এবং ব্যাংক খোলা থাকায় যানবাহন চলাচলের চাপ বেড়েছে। তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে ছাড়া হচ্ছে না বলে মতিঝিল থানার এসআই মো. শফিকুল ইসলাম জানান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে আমাদের যা যা করণীয় সবকিছুই করব। তবে জনগণকেও সহযোগিতা করা উচিত।
এদিকে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায়। এ ব্রিজের মুখে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। তবে সেখানে খুব শক্ত অবস্থান দেখা যায়নি। ঢিলেঢালা চেকপোস্ট পেরিয়েই মানুষ ঢুকছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা সকাল থেকেই কঠোর বিধিনিষেধের দায়িত্ব পালন করে আসছি। যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ফেরিতে করে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে যাত্রী ও যানবাহন আসছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া প্রান্তে। এসব ফেরিতে আসা যাত্রীরা কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রিকশা নিয়ে রাজধানীতে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা হচ্ছেন। গতকাল রবিবার সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরিগুলোতে শত শত যাত্রী ও প্রাইভেট কারের ভিড় দেখা গেছে।