বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নোয়াখালীর সুধারাম থানার বিনোদপুর গ্রামের মো. দুলাল হোসেনের ছেলে ও প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬), একই থানার নুয়ারনই গ্রামের বাহার মিয়ার মেয়ে তাছলিমা খাতুন (৩২) ও একই জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার মনপুরা গ্রামের আছান উল্লাহ’র ছেলে মো. ফয়জুল্লাহ (৩০)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজনকে আজ সন্ধ্যায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ফয়জুল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাহজাদপুরের গ্রান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মানবাধিকারের একটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ। এরপর বাকি দুজনকে গভীররাতে পাবনার ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহায়তায় পাবনার রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দুজনের কাছ থেকে ৬৩ হাজার টাকা, একটি মোবাইল, একটি প্রিমিও প্রাইভেটকার ও আরেকটি মানবাধিকারের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোপন সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারে যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোয়ন প্রত্যাশীদের কাছে জরিপের নামে অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে একটি প্রতারক চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনোয়ন প্রত্যাশী বিভিন্ন জনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মোবাইলে যোগাযোগ করছে এবং জনমত জরিপে তাদের এগিয়ে রাখবে মর্মে টাকা দাবি করছে। এরই প্রেক্ষিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং উক্ত প্রতারক চক্রের ব্যাপারে বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ করে ও তথ্য সংগ্রহ করতে থাকআ
এরই সূত্র ধরে গতকাল শাহজাদপু থেকে একজনকে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পাবনার রুপপুর এলাকা থেকে বাকি দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে নগদ টাকা, প্রাইভেটকারসহ মানবাধিকারের আইডি কার্ডও পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভুয়া জনমত জরিপের কথা বলে তারা বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিতো এবং অর্থনৈতিক সুবিধা চাইতো। তারা নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি এবং মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতো। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০/১২ জন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণামূলক অর্থনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে জাহাঙ্গীর ও তাসলিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ফয়জুল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।