চিকিৎসা করাতে গিয়ে কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ গুমের ঘটনায় সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেন নেপালে আটক হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নেপাল পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে কাঠমান্ডুর একটি কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আটক সিয়াম সংসদ সদস্য আনারের হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন। তিনি মরদেহ গুমের সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। তিনি আক্তারুজ্জামান শাহীনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সিয়ামকে আটকের বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আনার হত্যার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত ১৩ মে কলকাতায় সংসদ সদস্য আনার হত্যার পর মরদেহ গুমের ক্ষেত্রে সিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এরপর তিনি কলকাতা থেকে নেপাল যান। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনও ২০ মে ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু যান। পরে সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে খুনের ঘটনায় ভারতের কলকাতার নিউটাউন থানায় মামলা করেছে সেখানকার পুলিশ। আবার ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পারস্পরিক তথ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় ঢাকায় তিনজন এবং কলকাতায় একজন গ্রেফতার হয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, আক্তারুজ্জামান ও সিয়ামের পাসপোর্ট, মুঠোফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ইন্টারপোলকে অবহিত করেছেন। এই দুজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ডিবির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এছাড়া আক্তারুজ্জামানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরাতে ভারতেরও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে সংসদ সদস্য আনারের হত্যা তদন্তে আজ নেপাল যাবেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। এ টিমে নেতৃত্বে দেবেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তার সঙ্গে আরও দুজন যাবেন। সকাল ১০ টায় ফ্লাইটে নেপালের উদ্দেশে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন তারা।
গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। আট দিন পর তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। এখনো মরদেহের সন্ধান না মিললেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত যে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। হত্যার পর তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়েছে।