নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সেই পুকুরে এবার মিলল একশ রুপালি ইলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরে জাল ফেললে মাছগুলো ধরা পড়ে। এর আগে গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে পুকুরটি থেকে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে।
জানা যায়, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ৪০টি পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হোটেল সি প্যালেসের মালিক আবদুল মান্নান। বিশাল পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচ দিয়ে পানি কমান তিনি।
গতকাল বুধবার সকালে পানি প্রায় কমে এলে জেলেদের জাল দিয়ে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ মাছ ওপরে তুলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আরও পানি কমিয়ে একশ রুপালি ইলিশ ধরেন। বিগত বছরগুলোতেও এই পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিঝুম দ্বীপের পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর নতুন নয়। প্রায় পুকুরেই ইলিশের দেখা মিলে। আমাদের এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নেই, তাই জোয়ার হলেই পানি ঢুকে। সে পানির সঙ্গে ইলিশ মাছও ঢুকে। আজ একশ রুপালি ইলিশ পেয়েছে। গতকাল প্রায় ১০ কেজি পেয়েছে।
পুকুরের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, আমি দীর্ঘসময় ধরে পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ ধরি। প্রতি বছর কমবেশি ইলিশ পাওয়া যায় পুকুরটিতে। ২০২২ সালে প্রথম ধাপে ৩৫টি ইলিশ পেয়েছিলাম। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কেজির উপরে। ২০২৪ সালে এসে গতকাল পেয়েছি ১০ কেজি, আর আজকে একশ ইলিশ পেয়েছি। আগামী ৪-৫ দিন নিয়মিত মাছ ধরা পড়বে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এলে নিঝুম দ্বীপের প্রায় সবগুলো পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকরটিও ছিল। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, প্রায় পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর পাওয়া যায়। এটা কমন হয়ে গেছে। নোয়াখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলো জোয়ারে প্লাবিত হয়। তখন ইলিশ প্রবেশ করায় বর্তমানে সেটি ধরা পড়ছে। নদীতে ইলিশের যেমন বৃদ্ধি পায় পুকুরে তেমন বৃদ্ধি পায় না এবং স্বাদ ও আকৃতি এক হয় না।