নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এতদিন বিদেশ সফর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতাশা নিয়ে ফিরছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল বুধবার দেশে ফিরবেন। আওয়ামী লীগের চামচারা বিমানবন্দর সড়কে সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনদুর্ভোগ হয় এমন কোনো আয়োজনের দরকার নেই। কালকে উনি আসবেন, আসার পরে তিনি কোন সার্কাস দেখান, তা দেখার অপেক্ষায় আছি।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন আমাদের রাজনীতির সব থেকে বড় সংকট হচ্ছে দেশে এখন নির্বাচিত কোনো সরকার নেই। ভোট ডাকাতেরা ক্ষমতায়। পরপর দুইটা নির্বাচনে কোনোরকম ভোট হয় নাই। এক দেড় বছর আগে যখন আমরা বলতাম শ্রীলঙ্কার মতো সিমটম দেখা দিয়েছে, তখন প্রধানমন্ত্রীর কি রাগ! তিনি বলতেন আমরা নাকি উন্নয়ন চোখে দেখি না। এখন রিজার্ভের কি অবস্থা?
তিনি বলেন, দেশে রিজার্ভ নেই, আমেরিকান স্যাংশন, নানা কিছু নিয়ে তিনি ফিরবেন। এসেই রাগ দেখাবেন। ইনডিপেনডেন্স অব দ্য পলিটিক্যাল পার্টির কথা যদি আসে, তবে সতর্ক থাকুন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরে জনগণের ওপর কত অত্যাচার, নির্যাতনের কাহিনী না জানি আমাদের শুনতে হয়।
আলোচনা সভায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবকে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আলোচনা সভায় এ ঘোষণা দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল কায়সার।
পরে আ স ম আবদুর রব বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা কিছুদিন আগে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম। ২২ বছর পরে তাকে দেখলাম। তাকে দেখে মনে হলো তিনি অর্ধমৃত। এ সরকারের নেতাদের বলি, যদি মানুষের হৃদয় থাকে, তবে তার চিকিৎসার সুযোগ দিন। তার লিভার ও কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। এতসব কিছু জেনেশুনে তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দেওয়া জেনেশুনে হত্যার শামিল।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এ সরকারের অর্থনীতির নীতির আসল কথা হলো সম্পদ লুটপাট করা এবং ক্ষমতা ব্যবহার করে লুটের টাকা বিদেশে পাচার করা। সে লুটপাট বড় বড় প্রকল্পে আড়াল করে রাখে। অর্থনীতির ধস ঠেকানোর জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার তা নিচ্ছে না। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি আয়োজন করতে গেলে পুলিশের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যখন একটি সরকারের নৈতিক কোনো অবস্থান থাকে না, কোনো বৈধতা থাকে না, তখন তারা দমনমূলক সংস্থার ওপর নির্ভর করে। ডিএমপি কমিশনার এমন ভাষায় কথা বলছেন, তা আমরা সরকারের দুই মন্ত্রীর কথায় শুনি। তারা যে ভাষায় কথা বলেন, ধমক দেন, গতকালকে ডিএমপি কমিশনার সে ভাষায় কথা বলেছেন। তিনি যেটা করেছেন তা পেশাগত দায়িত্বের বাইরে এসে বলেছেন। তিনি কেবল এই কর্তৃত্ববাদী সরকারকে দীর্ঘায়িত করতে চান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।