এডিস মশা এদেশে ছিল না, বাইরে থেকে এসেছে : তাজুল ইসলাম

আমাদের দেশে এডিস মশা ছিল না, ডেঙ্গু রোগ ছিল না। এটা-তো বাইরের দেশ থেকে এসেছে। হয়ত ফ্লাইটে করে দুটি মশা দেশে এসে বংশ বিস্তার করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

রোববার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চলতি বছরের ৫ম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

এখন যে ডেঙ্গু হচ্ছে এটা নির্মূল করার পথ কি আপনাদের কাছে নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি বলেই অবস্থা অন্য দেশের তুলনায় ভালো। এটা ইউরোপে ছিল। ফ্রান্সে দেখা গেছে, এক দিনে ৭-৮ হাজার লোক মারা গেছে৷ এ রকম তথ্য আছে আমাদের কাছে।

২০১৯ সালের আগে দেশে ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা পরিলক্ষিত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব বেশি ছিল না। সে অভিজ্ঞতা আমরা সংগ্রহ করেছি এবং কী কী খাতে আমাদের ইন্টারভেনশন দরকার বা আউটপুট দরকার সে বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে ২০২০ সালে আমরা মোটামুটি সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিলাম।

মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে ২০ হাজারের মতো মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। কিছু মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সেটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না। এখন ২০২২ সাল। এ ২০২২ সালে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা আমাদের সমসাময়িক দেশগুলোতে মারাত্মকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত আমরা সেপ্টেম্বরের পর থেকে এর নিম্নগামী লক্ষ্য করেছি। প্রতিটি দেশে ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে এই রোগের একটা সম্পৃক্ততা আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো এটা নিম্নগামী অবস্থায় যায়নি।

তিনি বলেন, মশার জন্য কোনো বর্ডার নেই। বাংলাদেশের থেকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো অবস্থা অনেক ভয়াবহ। ভারতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় দুই লাখের মতো মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিল। বিশেষ করে কোলকাতায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হার অনেক বেশি। ১ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। আমার মনে হয়, এই সংখ্যাটা এখন অনেক বেড়েছে। মালয়েশিয়াতে ৩৭ হাজার ৯৫০ জন। ইন্দোনেশিয়াতে ৯৪ হাজার ৩৫৫ জন। ফিলিপাইনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫০ জন। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত (২৬ অক্টোবর) ৩৩ হাজার ৯২৩ জন। যদিও এটা আমাদের কাছে স্বস্তিদায়ক নয়।

মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যেমন সিঙ্গাপুরে মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখের মতো। এমনকি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের থেকে আমাদের দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি। আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ভাইরাস ছড়ানোর জন্য বড় কারণ। এটা তো মশাবাহিত ভাইরাস। সে কারণে যদি ওই ফিগার দেখি তাহলে আমাদের সফল বলতে হবে, কিন্তু আমি এটাকে সফলতা বলব না। আমাদের টার্গেট ছিল ২০২০ সালের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও নিচে নামিয়ে আনার।

মশা নিধনের জন্য যেসব উপকরণ ও ওষুধ লাগে সেগুলো বছরের শুরুতে সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারপর যে মেশিন লাগবে তারা (মেয়ররা) সংগ্রহ করেন। লোকবল লাগবে ৩ হাজার করে, সেটা তাদের দেওয়া হয়েছে। এসব কাজের জন্য এরই মধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই কোটি, পাঁচ কোটি করে আমি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। মশার ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে এক ধরনের মনোপলি ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা মনোপলি ভেঙেছি। আমাদের যে সমস্ত প্রক্রিয়া হাতে আছে, সেগুলো আমরা করেছি।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms below to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.