বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিজেটএম নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। প্রতিবছরের মতো এবারও দুই দিনব্যাপী জাকাত ফেয়ার আয়োজন করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। আগামী ২২-২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আলোকি কনভেনশন সেন্টার এই জাকাত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। জাকাত ফেয়ার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, আমরা মনে করি, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর দেশের জনগণের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন, দারিদ্র মুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে তা রূপায়নে জাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, সঠিকভাবে জাকাত প্রদান মানে শুধু অভাবীদের সহায়তা করা নয়, বরং তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা, যাতে তারা ভবিষ্যতে দাতা হতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে এক লাখ কোটি টাকার জাকাত হয়। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি—ইউএনডিপির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে প্রায় ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে ১ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। আর প্রায় ১৩ শতাংশ মানুষ ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যান।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, যদি এক লাখ কোটি টাকা জাকাত সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতো তাহলে বাংলাদেশে কেউ অভুক্ত থাকত না। ১ লাখ কোটি টাকা যদি ১ কোটি ৮৭ লাখ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষদের মাঝে বণ্টন করা হয় তাহলে জনপ্রতি ৫৩ হাজার ৪৭৫ টাকা করে পড়ে যা একটি মানুষের সারা বছরের খাদ্য যোগানের জন্য যথেষ্ট। বাংলাদেশে সিজেডএম এর মতো প্রাতিষ্ঠানিক জাকাত ব্যবস্থাপনায় ১০০০ কোটি টাকার জাকাত বিতরণ করলে ৫৩ লাখ মানুষের মৌলিক চাহিদা – খাদ্য, বস্ত্র, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব।
বক্তারা জানান, এবারের প্রতিপাদ্য “নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাকাত”। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর দেশের জনগণের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন, দারিদ্রদ্র্য মুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের যে স্বপ্নদ্র তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নে জাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যাকাত দান নয়, এটি ধনীদের সম্পদে দরিদ্রের অধিকার যাকাত একটি সামাজিক আন্দোলন, বৈষম্য দূর করে একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ গঠন করতে সাহায্য করে। এই আয়োজনে, আমরা সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি- ‘সমৃদ্ধ আগামীর জন্য সচেতনভাবে জাকাত দিন দারিদ্রদ্র্য হ্রাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখুন।
এবারের জাকাত ফেয়ারে স্পন্সর হিসেবে রয়েছে রহিমআফরোজ, খাদিম সিরামিকস, কোহিনুর কেমিক্যাল, রহিম চিল, সাউথ ব্রিজ, হজ্ব ফাইনান্স কোম্পানি, আইডিএলসি ইসলামিক, এসএমসিসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ফেয়ানে বিভিন্ন আর্থিক ও যাকাত প্রতিষ্ঠানের স্টলসহ জাকাত কনসালটেশন ডেস্ক ও বিভিন্ন ইসলামিক বইয়ের স্টল থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিষদের কনভেনার এবং রহিমআফরোজ গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক জনাব মুনওয়ার মিসবাহ মঈন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া ও সিজেডএম-এর হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন।