মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইছামাতি শাখা নদীর (খাল) উপরে একটি ব্রিজের অভাবে প্রায় ২শ বছর ধরে ১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে। উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের হিজুলিয়া পূর্বপাড়া এলাক দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদীর শাখা (খাল)। এর উপর ব্রীজ না থাকায় মানুষ অতিকষ্টে চলাচল করছেন বাঁশের সাঁকো দিয়ে।
এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২শ বছর ধরে মানুষ এই খালটি পার হচ্ছেন জিবনের ঝুকি নিয়ে। এই খলটির উপরে একটি ব্রিজের জন্য স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানদের কছে বারবার এলাকা বাসি আবদার জানালেও তারা শুধ তাদেরকে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। খালটির উপরে কাঙ্খিত ব্রিজ না হলে আঞ্চলিক মূল সড়কের সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থেকে যাবে বলে জানান এলাকা বাসি।
হিজুলিয়া পূর্বপাড়া, নয়াচর, বহলাকুল, নেগীরকান্দি, খোশালবাড়ি, কুঠিবাড়ী, রামকান্দাপুরসহ আরও কয়েটি গ্রামের মানুষের উপজেলার শহরে যাতায়াতের প্রধান রাস্তার মাথায় এই খালটি। সে জন্য গ্রামবাসীরা বাসের সাঁকো দিয়েই চলাচল করেন। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন খাল পারাপার হলেও, বর্ষা এলে প্রচুর স্রোতে বাজে বিপত্তি । খালটির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। জরুরী অনেক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত হন এই এলাকার বাসিন্দারা। অনেক শিক্ষার্থীদের ক্লাস মিসের ঘটনাও ঘটে। এছাড়া জরুরি রোগিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জসিম উদ্দিন বলেন, খালটির উপরে ৫০ থেকে ৬০ ফিট সেতুর নির্মাণ করা হলে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এছাড়াও কৃষকদের উৎপাদিত ধান,পাট, আখ, ভুট্রা, সরিষাসহ নানা পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি ও ব্যয় কমবে। চলাচলের এ দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে কয়েক হাজার মানুষ।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রানী বলেন, শুষ্ক মৌসুমে অতিকষ্টে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্কুলে যেতে পাড়ি। কিন্তু বর্ষা এলে নিয়মিত ক্লাস করতে পারিনা। খালে প্রচুর স্রোত থাকে, পারাপার হতে কষ্ট হয়।
বড়টিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক মোল্লা রওশন বলেন, হিজুলিয়া গ্রামের খালের উপরে ব্রীজ না থাকায় ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল সময়মত হাট-বাজারে নিতে না পেরে ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেনা। সে জন্য খালটি উপর দিয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে জানিয়েছেন বলে জানান।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাজ্জাকুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে খালটি সরেজমিনে পরির্দশন করেছি। এ ব্যপারে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হামিদুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যেই খালটির উপরে একটি ব্রীজ নির্মান করা হবে।