বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে অনেক তারকা-মহাতারকাই খেলে গেছেন। একের পর এক রেকর্ডও দেখেছে বিশ্বকাপ মঞ্চ। কিন্তু একটি রেকর্ড ভাঙতে পারেননি হাল আমলের রথি-মহারথি ফুটবলাররাও। এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১৩ গোল করা সেই রেকর্ড ৬৫ বছর ধরেই অক্ষুণ্ন রয়েছে। ফরাসি কিংবদন্তী জাস্ট ফন্টেইনের সেই কীর্তি বহাল দেখেই তিনি চিরবিদায় নিয়েছেন। ৮৯ বছর বয়সেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন ফন্টেইন।
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে তিনি এক আসরে সর্বোচ্চ গোল করার কালজয়ী রেকর্ডটি গড়েন। ৬ ম্যাচে তিনি প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছেন সর্বমোট ১৩ বার। সেই আসরটি ছিল আরেক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলের আগমনের জন্য বিখ্যাত। তবে সেমিফাইনালে ১৭ বছর বয়সী পেলের সামনে ম্লান ছিলেন এই তারকা। সেদিন পেলের হ্যাটট্রিকে ৫-২ গোলে ফ্রান্সকে বিধ্বস্ত করেছিল সেলেসাওরা। ফ্রান্সের দুই গোলের একটি ছিল ফন্টেইনের করা। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আরও চার গোল করেন তিনি। সুইডেনে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই আসরের পর আরও ১৬টি আসরে পেরোলেও তিনি এক আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসন দখল করে রেখেছেন।
ফ্রান্সের ম্যারাকেচ শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সদ্য প্রয়াত এই ফরোয়ার্ড। জাতীয় দল ছাড়াও নিসে ও রেইমসের হয়ে তিনি দীর্ঘদিন ফুটবল মাঠে নেমেছিলেন। তবে ফ্রান্সের জাস্ট ফন্টেইনের দুর্ভাগ্য যে, ইনজুরিতে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে দ্রুতই। তাই ওই আসরের পর আর বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যায়নি তাকে। তবে এক আসরেই করা ১৩ গোল নিয়েই বিশ্বকাপের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলের মালিকও বনে গেছেন তিনি।
১৯৫০ সালে ফরাসি ‘কোপ দ্য ফ্রান্স’র শিরোপা ও দুটি লিগ টাইটেল জিতেছেন ফন্টেইন। পরবর্তীতে ইউরোপীয় কাপের ফাইনালেও তিনি রেইমস দলের হয়ে খেলেছেন। যদিও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে তারা ম্যাচটি ২-০ গোলে হেরে যায়।
রেইমসের হয়ে ৬ মৌসুমে ফন্টেইন ১২১টি গোল করেছেন। এছাড়া সবমিলিয়ে লিগ ওয়ানের ২০০ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ১৬৫টি। এরপরই মাত্র ২৮ বছর বয়সেই পায়ের ইনজুরির কারণে ফুটবল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটে ফন্টেইনের।
পরবর্তীতে কোচিং ক্যারিয়ার শুরুর আগে সর্বশেষ ২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩০ গোল করারও রেকর্ড গড়েন ফন্টেইন। এই ফরাসি কিংবদন্তীর মৃত্যুতে বিশ্ব ফুটবলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।