গত বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত বজ্রপাতে সারা দেশে ৩৪০ জন মানুষ মারা গেছে। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছে ২৭৪ জন। এর মধ্যে ২৩৯ জন পুরুষ আর ৩৫ জন নারী। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশু রয়েছে ১২ জন।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) ঢাকার নবাবগঞ্জে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএফ) খোলা আকাশের নিচে কাজ করা কৃষকদের মধ্যে বজ্রপাত নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করার সময় এই পরিসংখ্যান প্রকাশ কর হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলীম, নির্বাহী সদস্য মোস্তাক আহমেদসহ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০২৩ সালে বজ্রপাতে প্রথম মারা যায় মার্চ মাসের ১৫ তারিখ। মার্চ থেকে মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত মারা গেছে ৬৬ জন। এর মধ্যে ৬৩ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশু রয়েছে ২ জন। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে ৮ জন। শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। নৌকায় থাকা অবস্থায় বা মাছ ধরতে গিয়ে মারা গেছে ১১ জন।
এছাড়া, বজ্রপাত ও কাল বৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছে ১ জন। বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময় বজ্রপাতে মারা গেছে ৩ জন।
অন্যদিকে চলতি বছর বজ্রপাতে মৃত্যুর মোট সংখ্যার মধ্যে পুরুষ মারা গেছে ৬৩ এবং নারী ৩ জন। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ২ জন ও কিশোর ৪ জন।
চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে হতাহতের কোনো ঘটনা না থাকলেও মার্চ মাসের ১৫ তারিখ থেকে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়। মার্চ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত মারা যায় ১৫ জন। এপ্রিল মাসে মারা যায় ৫০ জন। অন্যদিকে চলতি মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত পর্যন্ত মারা গেছে ১ জন।
বজ্রপাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। এবছর বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে। এ জেলায় মারা গেছে ৭ জন। সিলেট জেলায় মারা গেছে ৫ জন।
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম ২০১৯ সাল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের পর্যবেক্ষণ করে আসছে। সংগঠনের সভাপতি ড. কবিরুল বাশার ও সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে সরকারের কাছে দুই দফা দাবি জানিয়েছেন। এক. মানুষের মধ্যে বজ্রপাত সচেতনতা বাড়াতে বজ্রপাত সচেতনতা সম্পর্কিত বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দুই. মাঠে মাঠে বজ্রনিরোধক টাওয়ার নির্মাণ ও উচু দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগানো।