চলতি বছরেই নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে একসময়ের জনপ্রিয় শিশুশিল্পী প্রার্থনা ফারদিন দীঘির। ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত দুটি সিনেমা। প্রথমটি ‘তুমি আছো তুমি নেই’, দ্বিতীয়টি ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’। পরের ছবিটিতে দীঘিকে দেখা গেছে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ওরফে রেনুর চরিত্রে।
তবে এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে ঢাকায় চলছে স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় এটি পরিচালনা করছেন বলিউডের বিখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। এখানেও দীঘি অভিনয় করছেন জাতির পিতার স্ত্রীর চরিত্রে।
তবে ফজিলাতুন্নেসা মুজিব রেনু তরুণী বয়সে যেমন দেখতে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু ‘বায়োপিকে’ সেই ভূমিকায় দেখা যাবে দীঘিকে। বড় বয়সের চরিত্রে অভিনয় করছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা।
ভাবছেন এখানেই শেষ? না, এই মুহূর্তে ‘মুজিব ভাই’ নামে আরও একটি সিনেমার শুটিং করছেন দীঘি। সেখানেও তিনি ফজিলাতুন্নেসা মুজিব রেনুর চরিত্রে! এই নিয়ে পর পর তিন বার। একই চরিত্রে বারবার অভিনয় কেন? বা কতটা চ্যালেঞ্জিং একই চরিত্রে বারবার অভিনয় করাটা? সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তার জবাব দিয়েছেন দীঘি।
অভিনেত্রীর ব্যাখ্যা, ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ ছবিতে ‘রেনু’ চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেছি। এরপর ‘বঙ্গবন্ধু’ ছবিতে একই চরিত্রের জন্য আরও গভীরে যেতে হয়েছে। যে জন্য একই চরিত্রে অভিনয় করা এখন অনেক সহজ। ‘মুজিব ভাই’ ছবির পাণ্ডুলিপি ভিন্নভাবে লেখা। নতুন করে জানতে পারছি শেখ ফজিলাতুন নেছা রেনু সম্পর্কে।’
দীঘি জানান, ‘ছবিতে থাকছে জাতির পিতার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পাশাপাশি জেলজীবন। কঠিন এই সময়ে বঙ্গমাতার ভূমিকা কী, তা তুলে ধরা হবে। বঙ্গমাতা যেমন ছিলেন, তেমনই ছবিতে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করব। এটাই আমার এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’ তিনি বলেন, ‘রেনুর ভূমিকায় অভিনয়ের পর এ নামে পরিচিতিও পেয়েছি। অনেকেই আমাকে রেনু বলে ডাকছেন।’
প্রসঙ্গত, ‘মুজিব ভাই’ ছবিটি হচ্ছে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’-এর সিক্যুয়েল। এটি পরিচালনা করছেন শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার প্রযোজক সেলিম খান। যেখানে দীঘির বিপরীতে নায়ক হিসেবে অর্থাৎ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকায় থাকবেন প্রযোজকের ছেলে শান্ত খান। ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ ছবিতেও তিনিই নায়ক ছিলেন।
‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’তে বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোর দেখানো হয়েছে। পরিচালক-প্রযোজক সেলিম খান জানান, ‘মুজিব ভাই’তে দেখানো হবে বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোরের পরের অংশ। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে শুটিং। ছবিটি নতুন বছরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে মুক্তি দেওয়ার চিন্তা আছে বলে জানান সেলিম খান।
২০০৬ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল তারকা দম্পতি সুব্রত ও দোয়েলের একমাত্র সন্তান দীঘির। প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী বিভাগে জিতে নিয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর একই বিভাগে ২০০৮ ও ২০১০ সালে আরও দুটি জাতীয় পুরস্কার পান দীঘি। সেই ছোট্ট দীঘি এখন পুরোদস্তুর নায়িকা।